(ব্যর্থ এক সার্জারি নিয়ে ভোগান্তির কাহিনি এটা। যার মূল পর্ব শুরু ২০২০ সালের জানুয়ারিতে, এখনো চলমান। এখন একটা সিনেমাটিক ক্লাইমেক্সে দাঁড়ায়া আছে। তবে সেই গল্পে দুর্ধর্ষ কোনো অ্যাখ্যান নাই, বিরাট কোনো বাঁক-বদল নাই। অনেক বিরক্তিকর দীর্ঘশ্বাস আছে। কিন্তু এ গল্প আমার খুবই কাছের, আমার বর্তমান। আমার স্বজনদের জন্য পরীক্ষার, আমাকে ভালোবাসার। সেই গল্পটা আমার বন্ধুদের জানাতে চাই, অন্তত এক অধ্যায়ের সমাপ্তির আগে আগে। … অবশ্য পুরো গল্পটা এভাবে শেয়ার করা সম্ভব কিনা আমার জানা নাই। বিআরবি হাসপাতাল ও ডা. মোহাম্মদ আলী ছাড়া সব হাসপাতাল ও চিকিৎসকের নাম বদলে দেওয়া।)
আগের পর্ব: এক. অসুখের দিন, দুই. বাবা আর আমি পাশাপাশি, তিন. অপারেশন টেবিলের ঝাপসা দুনিয়া, চার. বাসায় ফেরার আনন্দ, পাঁচ. ঘুম ভেঙে দেখি শরীরজুড়ে রক্ত, ছয়. লজ্জা ভুলে কেঁদে উঠলাম হাসপাতালে, সাত. অপারেশন টেবিলে মৃত্যু নিয়ে রসিকতা, আট. হাসপাতালের বিল থেকে অর্ধেকের বেশি টাকা গায়েব, নয়. হোমিওপ্যাথির ডাক্তার বললেন, আপনি কি ক্ষমা করতে পারেন? দশ. সুন্দরবনে ব্যথার সঙ্গে যুগলবন্দি এগারো. কান্না সামলে আম্মাকে বললাম, ভালো আছি
অ্যান্টিবায়োটিক ও ওষুধ খাওয়া শেষে টেস্টের রিপোর্ট নিয়ে দেখা করতে গেলাম। আবার দু-একটা টেস্ট দিলেন। এভাবে যাওয়া-আসার মাঝে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লাম। টানা কয়েকদিন পেটে ব্যথা, হালকা হালকা জ্বর। হালকা নাকও টানছিলাম। মিশু এসে হাসপাতালে নিয়ে গেল। ডা. সালাউদ্দিন খেয়াল করলেন একটু নাক টানছি। উনি জিজ্ঞাসা করলেন, সর্দি আছে কিনা। বললাম, হালকা, তবে কাশি নাই। হালকা জ্বর। সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে সহকারীকে ডাকলেন। কেন শারীরিক অবস্থা জিজ্ঞাসা না করে আমাকে ঢুকতে দিলো। খুবই বিব্রত হয়ে গেলাম। উনি কোনোভাবে আমাকে বের করতে পারলেই বাঁচেন। কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে নিতেও দিলেন না। অবশ্য ‘সরি’ বললেন। বললেন, বোঝেন তো ব্যাপারটা। বিষয়টা অনেক অপমানজনক যদিও, তারপরও মেনে নেওয়া ছাড়া কী করার আছে।
কিছু ঝামেলার কারণে সার্জারির ডিসেশন নিতে পারছিলাম না। আমাকে হাসপাতালে কমপক্ষে তিনদিন থাকতে হবে। এ সময় যদি আমার বউ থাকেন ভালো। আবার ভাগনিও নেই। তারা আসাতক অপেক্ষায় থাকলাম। ওই সময় শবে বরাতের ছুটি পড়ল। সন্ধ্যায় নামাজ-কালামের কারণে পত্রিকায় ছুটিটা আগেরদিন থাকে। কিন্তু অনলাইন খোলা থাকে। ঠিক করলাম, এবার করবো না। ডে অফ মিলিয়ে দুইদিন ছুটি হয়ে যাবে। মিশুকে বললাম, চলো দুই ভাই মিলে শরীয়তপুর-মাদারীপুর ঘুরে আসি। আমাকে অবাক করে দিয়েও রাজি হয়ে গেল।
সেদিন রবিবার ছিল। দুপুরের খাবার ছিল বাসা থেকে আনা রুটি আর মাংস-আলুর তরকারি। সঙ্গে সেদ্ধ ডিম। খাওয়ার পর কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিল। আস্তে আস্তে পেটে ব্যথা বাড়তে থাকলো। কয়েক দফা গরম পানি খেলাম। অস্থিরভাবে একবার এদিকে যাচ্ছি, আরেকবার ওদিকে। অফিসে একটু শুবো সেই ব্যবস্থা নাই, আবার এমন সময়ে আসলে স্থির থাকা যায় না। এখন একা একা বাসায় যাওয়াই মুশকিল হয়ে গেল। মিশুকে ফোন দিলাম। মোবাইলে কোর্ট থেকে অফিস হয়ে বাসার দিকে রওনা দিয়েছে। মাথাব্যথা করছিল নাকি খুব। আমার ফোন দেখে বলল, অপেক্ষা করেন আসি। আমি অফিসের নিচে গিয়ে বসে থাকলাম। ২০ বা ৩০ মিনিটের মাথায় আসলো। আমাকে বাসার কাছাকাছি নামিয়ে দিল। পুরোনো মেসেজ ঘেটে ডা. ইমরানের দেওয়া ওষুধের নাম বের করে কিনে নিলাম। সারাদিন এমন বাজে অবস্থা গেল। ওষুধের সর্বোচ্চ ডোজ খেয়ে নিলাম। শেষে সাপোজিটরও নিলাম। কিছুতে কিছু হচ্ছে না।
ইমরান ভাইকে ফোন করতে বললেন, বাসায় আর করার কিছু নাই। আরেকটু দেখেন, ব্যথা না কমলে হাসপাতালে চলে যাবেন। বাসায় আমি আর আপা ছাড়া কেউ নেই। নিশানকে ফোন করতে বলল, দেরি হবে। সব শুনে আপা অস্থির হয়ে গেলেন। আস্তে আস্তে রাত নয়টা নাগাদ ব্যথা কমতে থাকলো। মোটামুটি সহনশীল একটা পর্যায়ে গেল। পরদিন বাসায় ছিলাম, তৃতীয়দিন এসে মিশু আর মেজবাহ হাসপাতালে নিয়ে গেল। ডাক্তার কিছু ওষুধ দিয়ে সপ্তাহখানেক পর ভর্তি হতে বললেন।
যাই হোক, এভাবে সার্জারি পিছিয়ে যাচ্ছিল। যতবার যাই এই টেস্ট, ওই ওষুধের কমতি ছিল না। রোজা শুরু হয় ১৪ এপ্রিল। তার কিছুদিন আগে বউ আর ভাগনি আসে। কিন্তু পরদিন থেকে শুরু হয় লকডাউন। সম্ভবত রোজার প্রথম দিন থেকে। তাই লকডাউন উঠার অপেক্ষা করি। আর রোজার মাঝে হাসপাতালে থাকতে মন চাইছিল না। এর আগের রোজায় ড্রেসিংয়ের জন্য মোটামুটি প্রতিদিন হাসপাতালে ছুটতে হতো। কিন্তু রোজা কামাই দিই নাই। এবার বিষয়টা একদম উল্টো হলো। দুই দিন ভালো থাকি তো, চার দিন খারাপ। সব মিলিয়ে ১৭টা রোজা রাখতে পারি নাই।
ডা. সালাউদ্দিনে অধ্যায়টা শেষ করা যাক। রোজার আগে আগে তিনি আবার ইউএসজি করাতে বলছিলেন। পপুলারে গেলাম। সেখানকার ডাক্তার ভদ্রমহিলা বেশ কনফিউজড হয়ে গেলেন। দুই দফায় সময় নিয়ে ইউএসজি করালেন। তারপরও শিওর হতে পারলেন না, পেটের মধ্যে পিত্তথলি কোনো অংশ রয়েছে কিনা। এমনিতে জিনিসটা পাওয়া যায় না, কিন্তু কোনো একটা পয়েন্টে আসলে মনে হয় আছে। তিনি সিটি স্ক্যান বা এমআরসিপি প্রেসক্রাইব করলেন। ডা. সালাহউদ্দিন বললেন, সন্দেহ যেহেতু আসে করে আসুন। উনি আল-শেফা বাদ দিয়ে অন্য একটা হাসপাতালের নাম বললেন। আমি জানালাম, আগে যেখানে করেছিলাম, সেখানে কমপক্ষে ৩ হাজার টাকা কম খরচ পড়বে। বললেন, ঠিক আছে সেখানেই করান। এমআরপিসিতেও বলা হলো, পিত্তথলির একটা খণ্ডিত অংশ দেখা যাচ্ছে। ডা. সালাউদ্দিন বললেন, দ্রুত এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান।
রোজার মাঝামাঝিতে একদিন সন্ধ্যার খাবারের পর পেটে ব্যথা শুরু হলো। বাথরুমে গেলাম। ব্যথা হালকা কমলেও সেহেরির পর বেড়েই চলছে। ঘণ্টা দু-এক কোনোভাবে সহ্য করার পর রোজা ভেঙে ফেললাম। গরম পানি, ওষুধ খেতে থাকলাম। ১১টা-১২টা নাগাদ খানিকটা কমলো। লকডাউন থাকায় চলাচলের জন্য একমাত্র বাহন ছিল অফিসের গাড়ি। যাওয়ার সময় ঠিকঠাক যেতে পারলেও সন্ধ্যায় ফিরতে গাড়ি পাওয়া কষ্টকর ছিল। সপ্তাহে দুদিন যেতাম, ওই দিনগুলোতে কখনো সময়মতো ইফতার করতে পারতাম না। এমনিতে হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে গড়িমসি, তারপরও এক শুক্রবারে ডা. সালাউদ্দিনকে কল দিলাম। যাতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যথা কমানোর কোনো সমাধান পাওয়া যায় বা কোনো এন্টিবায়োটিক লাগলে যেন দেন। ফোন ধরার পর সমস্যা জানালাম। উনি ‘কাল আসেন’ বলে ফোন কেটে দিয়েছেন আমি খেয়াল করি না। আরও কী যেন বকবক করার পর খেয়াল করলাম, ওপাশে কেউ নেই। আসলে ফোনে রেমিডি দেবেনই বা কেন, প্রতিবার রিপোর্ট দেখাতেই তো ৫০০ টাকা নেন! যাই হোক, পরদিনের সিরিয়ালের জন্য আল-শেফায় ফোন দিলাম। তারা সিরিয়াল কনফার্ম করে বলল, বিকেলে যেন আরেকবার ফোন করে কনফার্ম হয়ে নিই। আচ্ছা। এখন ঝামেলা হলো, সকালে অফিসের গাড়ি ঠিকই পাবে। সাত ঘণ্টা ধরলে অফিস শেষ তিন ঘণ্টায়। মানে আরও চার ঘণ্টা অসুস্থ শরীরে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যাই হোক, দুপুরের পর কল দিয়ে কনফার্ম হলাম ডাক্তার থাকবেন।
ইফতার শেষে নিচে নামলাম। রিকশা নিয়ে রওনা হলাম আল-শেফায়। আমার সিরিয়াল দুই নম্বর। গিয়ে দেখি তখনো ডাক্তার আসেনি। রাশেদ আসার কথা, সেও এসে পৌছেনি। এসেই বলেছিলাম, ডা. সালাউদ্দিনের কাছে এসেছি। উনার এটেনডেন্ট বসতে বললেন। প্রায় আধাঘণ্টা অপেক্ষা করছি, তখন এক ডাক্তারের এটেনডেন্ট বললেন, সালাউদ্দিন স্যার তো আর আসবেন না। ইফতারের আগে এসে একজন রোগী ছিল, দেখে গেছেন ও বলেছেন আজ আর আসবেন না।
এ কথা শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। লকডাউন কতদূর থেকে এলাম, এর ওপর সারাদিন বাসার বাইরে, শুয়ে থাকারও উপায় ছিল না। প্রায় কিছু না খাওয়া অবস্থা। ওরা বলল, তাদের কিছু করার নেই। একজন বললেন, ওনার নাম্বারে কল দেন, আশপাশে থাকলে হয়তো দেখে যেতে পারেন আপনাকে। ফোন করতেই ডা. সালাউদ্দিন ধরলেন। আমাকে আসতে বলার কথা সরাসরি অস্বীকার করলেন। বললেন, আপানাকে বলেছিলাম আমার একটা কনফারেন্স আছে। আপনি শনিবার না এসে অন্যদিন আসেন। আমি বললাম, আপনি তেমন কিছু বলেন না। উল্টো কথার মাঝখানে কল কেটে দিছেন। উনি বললেন, এখন আমি আসতে পারবো না। পরে একদিন আসেন। আমি বললাম, ধন্যবাদ আপনার সেবার জন্য। আমি আপনার কাছে আর কোনোদিন আসছি না। ফোন কেটে রাগে গজগজ করতে করতে বলছি, এ জন্য বাংলাদেশের ডাক্তারদের ওপর কেউ ভরসা রাখে না।
সোজা নিচে নেমে হাঁটা শুরু করলাম। অনেকটা পথ এসে সিএনজি নিলাম। তখনই রাশেদের কল। ও হাসপাতালে আমাকে না দেখে কল দিয়েছে। ঘটনা জানালাম। বললাম, রাগের মাথায় কিছুই মনে আসে নাই। ওদের বল, ডাক্তার আসবে না, এটা জেনেও কেন তারা আমাকে ফোন করে নাই। তাইলে ফোন নাম্বার রাখার কারণ কী! রাশেদ কিছু একটা বলেছে, এর আধাঘণ্টা পর একজন হটলাইন থেকে ফোন করে বললেন, ডা. সালাউদ্দিন আজ আসবেন না। আপনি অন্যদিন আসুন। আমি কিছু বলার আগেই কেটে দিল। ওই নাম্বারে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি এসে ফিরে যাওয়ার পর কেন ফোন করলেন, আর অভিযোগ তো করেছে আমার লোক। তারা বলল, আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের এখনই জানালো। বললাম, আমি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করতে চাই, কোথায় ফোন করবো। জবাবে বলল, আমাকে হাসপাতালে আসতে হবে। হায়! আবার হাসপাতালে ফিরে যাবো।
তখন একই সঙ্গে ভাবছিলাম, আবার ডাক্তার পাবো কই? একজন ডাক্তার খোঁজা কত যে জটিল বিষয়, হাড়ে হাড়ে কি টের পাই নাই! আবার কি ডা. সালাউদ্দিনের কাছে যাবো।
বাসায় ফিরতে বউ জিজ্ঞাসা করল, ডাক্তার দেখিয়েছি কিনা। ঘটনা বলতেই তার উত্তর, আমার নাকি ভুল। আমি কেন ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে ফোন করে যায়নি? হাতে ছিল শরবত ভর্তি গ্লাস। শরবতটা মেঝেতে ঢেলে দিলাম।
দারাশিকো ভাইকে হাসপাতালে সামান্য কথায় ভাবির ওপর রেগে যেতে দেখছিলাম। উনাদের নিশ্চয় ঝগড়াঝাটি হয়, কথাও হয়তো কখনো কখনো বন্ধ থাকে। কিন্তু আমার সামনে বা অন্যদের সামনে নিশ্চয় নয়। সেটা আমাকে অনেক ভাবিয়েছে। কারণ আমার নিজের দীর্ঘ অসুস্থতার ভেতর দেখেছি, এ দুর্যোগে শরীর-মন দুই কীভাবে সাফার করে। অবশ্য আমরা শরীর আর মনকে আলাদা করবো কীভাবে! একটি অসুস্থ হয়ে অন্যটি ভালো থাকে না। এ ছাড়া আর্থিক বা পেশাগত থাকে একরকম চিন্তায়। এরপর অন্যরা সামান্য অবহেলা করছে কিনা তাও নিত্যদিনের চিন্তার খোরাক হয়ে যায়। এর জন্য আমাকেও নানাভাবে সাফার করতে হয়েছে। যেমন; অফিসে আমাদের লম্বা সময় পর একটা ইনক্রিমেন্ট হয়। আমাদের প্রায় সবার নির্দিষ্ট ইনক্রিমেন্টের বাইরে আলাদা একটা টাকা যোগ হয়। আমার হয় নাই। এ নিয়ে আমি জিজ্ঞাসাও করি নাই। মন খারাপ ছিল দেখে অন্যদের কেউ কেউ বলল, উপসম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু মনে হইতেছিলাম, শরীর খারাপের অজুহাত দেখানো হবে। আমার শরীর খারাপ ছিল দেখে দীর্ঘ সময় হোম অফিস করেছিলাম। অথচ কাজে ফাঁকি দিই নাই। চাকরি থাকার জন্য যে কৃতজ্ঞতা সেটা উবে যেতে সময় লাগলো না। অবশ্য শেষবার হিসেব-নিকেশে দেখা গেল আরো ৯০ দিনের বেশি ছুটি জমা আছে।
যাই হোক, দীর্ঘ অসুস্থতার ক্ষেত্রে অন্যরা কীভাবে ট্রিট করে বা আদেশ-নিষেধের বেড়াজালে আটকে দিতে চায় সেটাও যন্ত্রণার কারণ হয়। তারা মনে করে, এই করো সেই করো এর মধ্য দিয়ে সকল দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। বা নিজেরা যখন অপ্রাপ্তির বয়ান তুলে কান ঝালাপালা করতে থাকেন, তখন তো মনে হয়, আপনার যন্ত্রণাকে কেয়ার করছে না। কিন্তু শেষ বিচারে এই মানুষগুলো যতটুকু কাছে থাকে আমাদের শোকরিয়া করা ছাড়া উপায় কী!
দারাশিকো ভাইও ভালোভাবে ভুগছে। টিবির পাশাপাশি অন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। উনার অপারেশনের ক্ষতটা কোনোভাবেই ভালো হচ্ছে না। সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। পরবর্তীতে দেখা যায়, ক্ষতের মাঝে জীবাণু বাসা বাধছে। যার কারণে কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ভেতরে ঢুকতে পারছে না। এখন আবার সার্জারি করে ওই ক্ষতের মুখ কেটে দিতে হবে। তখন যদি অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে। অবশ্য দারাশিকো ভাইয়ের কাছ থেকে অসুখ নিয়ে বিস্তারিত জানা মুশকিল। এটাকে তিনি বিব্রতকর হিসেবে নেন, কারো সাহায্যও যেন দরকার নাই। অন্যদিকে আমার জন্য বন্ধুরা কত সাহায্য করছে। তারা মনোযোগ না দিলে আমার কত রাগ! এখন আবার লিখেও জানাচ্ছি।
যাই হোক, এখনকার ঝামেলাটা নিশ্চয় আপনারা বুঝতে পারছেন। আমার একজন ভালো সার্জন দরকার। জানুয়ারিতে ঠিক যেখানে ছিলাম, এপ্রিলে এসেও একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি। রাশেদকে বলছিলাম, এখন ডাক্তার খুঁজতে হবে। না পেলে আবার ডা. সালাউদ্দিনের কাছেই যেতে হবে। এ ছাড়া কোনো উপায় নেই।
এর মাঝে একদিন বাসায় ফিরতে ফিরতে একটা বিষয় মাথায় আসলো। ওই সময় নির্বাসিত ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্যের কথা মনে পড়লো। উনি একজন চিকিৎসক, তবে ফামের্সি নিয়ে কাজ করেছেন। উনি আবার ফেসবুক বন্ধু হলেও কখনো আলাপ হয় নাই। আমার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। বাসায় ঢুকতে ঢুকতে রিফাত হাসানকে ফোন দিলাম। পিনাকী দা’কে যেন এক ভালো সার্জেনের খোঁজ চেয়ে মেসেজ দেয়। রিফাত সব শুনে বললেন, পিনাকী দা অনেক দিন প্র্যাকটিসে নাই। দেশের সঙ্গে কতটা যোগাযোগ জানি না। আপনাকে হয়তো ‘জেনোস প্যারাডক্স’ কোনো সাহায্য করতে পারবেন। নামটা পরিচিত মনে হলো। দার্শনিক জেনো হিসেবে নয়, ফেসবুকার হিসেবে। পরে জেনেছি আমার ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ বই উপলক্ষে উনার সঙ্গে ফেসবুকে অ্যাড হলেও পরে উনিই আনফ্রেন্ড করেন। যাই হোক, রিফাত উনাকে আমার কথা বললেন। আমি ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে মেসেজে আমার ডিটেইলস জানালাম।
জেনোর মূল নাম মহসিন রাহুল। তিনি প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বললেন। পুরো বিড়ম্বনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করলেন। এত জটিল পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণত কেউ যায় না। উনার মতে, আমার দ্বিতীয়বার ছুরি-কাচির নিচে যাওয়া ঠিক হবে না। অপারেশনের মাধ্যমে শরীরের মানচিত্র নষ্ট হয়। এটা যদি দ্বিতীয়বার হয়, তবে সেটা ভালো কিছু না। পারলে ব্যথাটা সহ্য করে নেন। এই যেমন; অন্য অনেকে ক্যানসারের ভয় দেখাচ্ছিলেন। উনি বললেন, আরে নাহ! এ বয়সে এটার চিন্তা কইরেন না। কিন্তু ব্যথা যেহেতু আছে! তাই সার্জারি করতে হলে অবশ্যই ভালো কোনো ডাক্তার খুঁজে বের করতে হবে। যাই হোক, উনি দুজন সার্জনের খোঁজ দিলেন। একজন হলেন ডা. মোহাম্মদ আলী, আরেকজন বিখ্যাত একটা হাসপাতালে হেপাটোবিলিয়ারি বিভাগে প্রধান ডা. আজগর হোসেন।
যেহেতু অনলাইনের কারণে অনাগ্রহ ছিল তাই ডা. আজগরকে বেছে নিলাম। উনার মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালে সার্জারি করানো হলো পরিকল্পনা। তার চেম্বার বেসরকারি হাসপাতাল এইড হোমে। এখানে আমাদের এক বন্ধু বাইপাস হয়েছিল। মূলত হার্টে রিং পরাতে গেছিল, কিন্তু রিং আটকে যাওয়ায় পরে বাইপাস করাতে হয়। তাই ওই হাসপাতাল এড়িয়ে চলা। বেশ আয়োজন করে লকডাউনের মাঝে এইড হোমে আসলাম। ডা. আজগর আসলেন। এক মিনিটও সময় দেন নাই। ডা. সালাউদ্দিন ওনার কলিগ। বললেন, ও ডা. সালাউদ্দিনকেও দেখিয়েছেন। আপনার অপারেশন দরকার। ঈদের পর ভর্তি হয়ে যান। আমি বললাম, এখানে তো অনেক খরচ, সরকারি হাসপাতালে করতে চাই। উনি বললেন, খরচ তো প্রায় সমানই। ঈদের পর আসুন। লিখে দিচ্ছি। তো, উনি সরকারি হাসপাতালে রেফার লিখে দিলেন।
পুরো বিষয়টা গোলমেলে রয়ে গেল। যেমন; উনি শুরুতে বলে দেন, সরকারি হাসপাতালে এখন ভর্তি হওয়া ভীষণ ঝামেলার। কভিডের কারণে নানান রেস্ট্রিকশন আছে। আমি বললাম, আপনি বললে হবে না। আপনি তো ওই বিভাগের প্রধান। তিনি রেফার লিখে দিয়ে অনির্দিষ্ট একটা ভঙ্গি করলেন।
এ নিয়ে আমাদের ফিচার বিভাগের মোহসিনা লাইজু আপার সঙ্গে কথা বললাম। অনেক বছর আগে উনারও গলব্লান্ডার সার্জারি হয়েছিল। উনার সঙ্গে পেশাগত কারণেও অনেক চিকিৎসকের সঙ্গে পরিচয় আছে। এর মাঝে একদিন উনি মোবাইল দিয়ে বললেন, কথা বলো। লাইজু উনার নাম না বললেও একটু জানালেন, এই লোক চিকিৎসকদের কোনো এক সংগঠনের নেতা।
উনি বেসরকারি কোনো হাসপাতালে সার্জারির পরামর্শ দিলেন। আমি বললাম, সরকারি হাসপাতালেই করবো। উনি জানালেন, আমি যে ডাক্তারের (আজগর হোসেন) কাছে গেছিলাম, তাকেই ফোন করে দেবেন। দিলেই বিভাগে ভর্তি করিয়ে নেবে। কিন্তু সার্জারি কবে হবে নিশ্চয়তা নেই। সরকারি হাসপাতালে সাধারণত জটিল বিষয়গুলোর ওপর জোর দেয় আগে। এমনও হতে পারে আমাকে একমাস ভর্তি হয়ে থাকতে হবে। এ সময় হাসপাতালেই থাকতে হবে। তাইলে করোনার সময় একটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। এ ছাড়া মাসখানেক ‘অহেতুক’ খরচ বা স্বজনদের নিয়মিত আসা-যাওয়া একটা ঝক্কির ব্যাপার। তারপরও যদি সরকারি হাসপাতালে যেতে চাই ওই ভদ্রলোককে যেন ফোন করি!
সবকিছু শুনে তব্দা খেয়ে গেলাম। পরিস্থিতি তো ভীষণ জটিল। বেসরকারি কোথাও সার্জারি ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। ভেবেচিন্তে ঠিক করলাম ডা. মোহাম্মদ আলয়র কাছেই যাবে। রিফাত হাসান একবার বলেছিলেন, ওনার মাকে অনলাইনে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। খুবই ভালো ব্যবস্থা ছিল। ফোন করে সময় বুকড করলাম।
নির্ধারিত দিনে ডা. মোহাম্মদি আলী প্রতিষ্ঠিত লিভার ফাউন্ডেশনে গেলাম। এখানে উনি তিনদিন রোগী দেখেন। আর পারিশ্রমিকটা ফাউন্ডেশনের ফান্ডে দিয়ে দেন, এমন একটা প্রচারণা দেখলাম। উনাকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত আর্টিকেল বাধাই করে রাখা হয়েছে। সহজ পরিবেশ। খানিকটা সময় বসার পর আমার সিরিয়াল এলো। কম্পিউটার স্ক্রিনের ওপাশে ডা. আলী। আর আমার পাশে ওনার দুই সহকারী। তারা আমার সব কাগজপত্রের ছবি তুলে মোবাইলে উনার কাছে পাঠালেন। আমিও ধীরে ধীরে পুরো গল্পটা বললাম। উনি মন্তব্য না করলেও ডা. আকবর ও ডা. রাফিকে নিয়ে সন্তোষজনক অর্থে মাথা নাড়লেন এক সহকারী।
ডা. আলী বলছিলেন, আমার অপারেশনটা বেশ ক্রিটিক্যাল ছিল। তাই হয়তো পিত্তথলির সামান্য একটা অংশ রয়ে গেছে। কিন্তু এটাকে বড় কোনো সমস্যা আকারে তিনি দেখছেন না। বরং দ্বিতীয়বার অপারেশন জটিল হতে পারে। আরেকটা ইউএসজি করতে বললেন। নির্ধারিত দিনে ইউএসজি রেজাল্ট নিয়ে হাজির হলাম, মানে উনাদের ওখানেই করিয়েছিলাম। যে ভদ্র মহিলা ছিলেন ইউএসজি রুমি উনাকে ততটা সিরিয়াস মনে না হওয়ায় অনেক খুঁতখুঁত রয়ে গেল। যাই হোক, ডা. মোহাম্মদ আলী কাগজপত্র পরীক্ষা করে বললেন, না অপারেশন করার মতো কোনো সমস্যা তিনি দেখছেন না। এইচ ফাইরোলির বিষয়টাও আমলে নিলেন না। তারপরও যেহেতু ব্যথা রয়ে গেছে তিনি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চান। কয়েকটা ওষুধ লিখে দিলেন। একমাস পর আবার ইউএসজি করে আসতে বললেন।
সত্যি বলতে কী বিষয়টা অদ্ভুতই লাগছিল। যদিও ডা. মহসিন এমন কিছুই আগে বলেছিলেন। উনাকে আমলে নিই নাই এমন না, বাট ম্যাক্সিমামের মনোভাবের একটা ব্যাপার আছে। কিন্তু ডা. আকবর আহমেদ ও ডা. মোহাম্মদ আলীরর মতামত মিলে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। তারা দুজনেই এ বিষয়ে এক্সপার্ট। যেখানে অন্য ডাক্তাররা পারলে তখনই অপারেশনের টেবিলে তুলে নেন, সেখানে তারা অপারেশনের একদম বিপক্ষে। ডা. আকবর আহমেদের ক্ষেত্রে হার না মানা বা নিজের রেপুটেশনের বিষয় হয়তো থেকে যায়, ডা. আলীর ক্ষেত্রে বিষয়টা তেমন না। তিনি যেভাবে সময় নিয়ে খুটিয়ে খুটিয়ে অনলাইনে শুনেছেন আমি খুবই কৃতজ্ঞ তার কাছে।
তার হাসপাতালের ইউএসজি নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকলেও উনার পজিটিভনেস ভালো লেগেছে। পরে ওষুধ কিনতে গিয়ে দেখলাম, খুব বেশি সিরিয়াস কোনো ওষুধ দেন নাই। একটা অ্যান্টিবায়োটিক, একটা গ্যাস্টিক ও আরেকটা ব্যথা ওষুধ। মাঝেরটা ছাড়া বাকি দুটোর একটা এক সপ্তাহ, আরেকটা দুই সপ্তাহের জন্য দিছেন। মানে সমস্যাটা গুরুতর মনে করছেন না উনি। তাইলে দেখা যাক!
আমার অবস্থা বরাবরই একটা অস্বস্তির মধ্যে থাকে। হালকা কোথাও চিনচিন করলে বা হঠাৎ একটা অন্যরকম লাগলে ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু ডা. আলীর কাছে পরের দফায় যাওয়ার আগে থেকে মানে প্রায় পুরো রোজা ভোগার পর সমস্যা যেভাবে গুরুতর হয়ে ফিরে নাই।
এর মাঝে মজার একটা ঘটনা বলি। গল্পটা লিখতে লিখতে এ পর্যায়ে ফেসবুকে ঢুঁ মারি। এখন দেখি স্কুলে ক্লাসের তিন মাসের সহপাঠী সাদী আমার একটা ছবিতে লাইক দিছে। ওর সঙ্গে যখনই কথা হতো, একটাই কথাতে গেলে কোনো অজুহাতে ফোন কেটে দিতাম। কেন আমার বউ আমার সঙ্গে নেই। থাকা উচিত! ওর ধারণা, বউ কাছে থাকলে ছেলেদের অনেক অসুস্থতা সেরে যায়। তো, এই চার মাস আমরা একসঙ্গে ছিলাম।
ডা. মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে দেখা করার আগে দারাশিরো ভাইয়ের বাসায় যাই। আরও দুই বন্ধু ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ডা. ইমরান। আসার সময় আমরা অনেকটা পথ একসঙ্গে আসি। উনি বলছিলেন, আমার বিষয়টা কোনো না কোনোভাবে সলভ হবে। বিড়ম্বনা যতই হোক, একটা সমাধানে পৌঁছা যাবে। কিন্তু দারাশিকোর বিষয়টা দিনদিন ক্রিটিক্যাল হচ্ছে। এসব বলতে বলতে আমরা শারীরিক জটিলতার মানসিক দিকগুলো নিয়ে কথা বলছিলাম।
ডা. ইমরান খুবই বিরক্ত। বারবার দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে নিজের অনাস্থার কথা বলছিলেন। কোথায় কারো কিছু বলার নাই, স্বচ্ছতা নাই। বললেন, উন্নত দেশ হইছে অভিযোগ করে আপনারা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারতেন। আর আমাদের দেশে তো এ বিষয়ে প্রতিকার নিয়ে কোনো আইনি দিক নেই। বললাম, এ বিষয়ে একটা বিল আনা হলেও পরে এক বা দুদিনের মাথায় আদালতে আবেদন করে স্থগিত করা হয়।
ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে আবার লকডাউন শুরু হলো। মাঝে ঈদের জন্য কিছুদিন সব খোলা ছিল। দেখতে দেখতে সময় চলে গেল। দু-একবার অস্বস্তি ছাড়া ব্যথা-বেদনা আর আসে নাই।
দেড় মাসের মাথায় এইড হোমে দিয়ে ইউএসজি করালাম। দারাশিকো ভাই ডা. শুভাশীষ গাঙ্গুলির প্রশংসা করেছিলেন। ডা. শুভাশীষকে আসলেই ভালো লাগলো। স্ক্রিনে কোথায় কী আছে দেখিয়ে দিচ্ছিলেন। উনি খুব সহজেই একটা পয়েন্ট চিহ্নিত করে ফেললেন। সেটা নিয়ে অন্যদের কনফিউশন ছিল। জিনিসটা ধরা যাচ্ছিল আবার যাচ্ছিল না। ওই পয়েন্টটা দেখিয়ে বললেন, এটা পিত্তথলির একটা অংশ। পুরো পিত্তথলি না। এটা লিভারের সঙ্গে আটকে আছে। আমার পরামর্শ হলো, অপারেশনে যাওয়া ঠিক হবে না। যদি অপারেশন করা হয়, ধরে ধরে পরিষ্কার করতে অনেক সময় লাগবে। সেটা এমন কোনো দরকারি বিষয় না। এখন এটা লিভারের সঙ্গে আরও বেশি লেপ্টে গেছে। ফলে বেশি সময় ও জটিল হবে। তার চেয়ে বরং এভাবেই থাকুক। কোনোভাবে ব্যথা কমানো যায় কিনা, সেটাই দেখা যাক।
উনাকে বললাম, ডা. মোহাম্মদ আলীও সমস্যা মনে করছেন না। ডা. শুভাশীষ বললেন, আমারও তাই মনে হয়। বেশ গর্ব করেই বললেন, এইড হোমের ডাক্তাররাও সার্জারির আগে উনার ওপর নির্ভর করেন। উনি যদি ‘হ্যাঁ’ বলেন, তবেই সার্জারি হয়। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করলাম না। কারণ এইড হোমের হেপাটোবিলিয়ারি প্রধানই ডা. সালাউদ্দিনের প্রেসক্রিপশন দেখে বলে দিছিলেন, ঈদের পর ভর্তি হয়ে সার্জারি করে ফেলেন। ডা. শুভাশীষ বলছিলেন, কাজের প্রতি ডেডিকেশন থাকতে হয়। এ কারণে তার কাছে রোগীরা বারবার ছুটে আসে। প্রয়োজনে যেন আবার চলে আসি।
এদিকে ডা. মোহাম্মদ আলীর ফাউন্ডেশনের ফোন কেউ ধরে না। কয়েক দিন পর খুঁজতে খুঁজতে জিবিজি হাসপাতালে উনার সিরিয়াল পাওয়া গেল। নির্ধারিত দিনে সেখানে পৌঁছে। অনলাইনে কথা হলো। বললেন, আপনার কোনো সমস্যা নাই। কোনো ওষুধ খেতে হবে না। শুধু মাংস-তেল-চর্বি জাতীয় খাবারে সতর্ক থাকতে বললেন। বললাম, এটা ঠিক দু’মাস আগের মতো ব্যথা নেই। যদি আবার আসে। উনি ব্যাখ্যা দিলেন না। বললেন, ব্যথার মতো কোনো কিছু আমি দেখছি না। যদি আবার কখনো এমন কিছু হয়। দ্রুত আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তখন আমার সিদ্ধান্ত নেবো কী করা যায়!
চলবে …
দারুণ লাগলো পড়তে, আগেও কোনো কোনো পর্বের শিরোনাম চোখে পড়ছিলো কিন্তু, এই-ই প্রথম পড়া হইলো। পেছন ফিরে একদম শুরু থেকে পইড়া আসার ইচ্ছা রাখতেছি। চলুক…
সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি।