দুনিয়ার সব প্রান্তে নামে-বেনামে শুভ-অশুভ বা উচিত-অনুচিতের দ্বন্ধ মোটাদাগে হাজির। আমরা প্রায়শ অশুভকে শুভের অধীনস্থ না দেখিয়ে বিপরীত হিসেবে দেখি । এ যেন সেয়ানে সেয়ানে লড়াই। এই লড়াইয়ের সাথে সিনেমায় অশুভশক্তির সাথে সুপারহিরোর লড়াইয়ের মিল পাওয়া যায়। যেখানে ধর্ম, বিজ্ঞান আর মিথের মিশেল দেখা যায়। এর প্রাথমিক স্বাক্ষী সুপারহিরোর জনক কমিকস বইগুলো।এরপর আছে হলিউড-বলিউডের দুনিয়া কাপানো চলচ্চিত্রগুলো।
মানুষের ইতিহাস নানা ধাপ অতিক্রম করে এক পর্যায়ে বলছে অযৌক্তিক যেকোন কিছুকে ত্যাগ করতে হবে। এই রূপান্তরের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ মিথকে মিথ্যা, অদরকারী ও বাতিল বলে অগ্রাহ্য করেছে। কিন্তু অন্য অনেক কিছুর মতো অদরকারী বলে পুরোপুরি এরা অদৃশ্য হয়ে নাই, বরং এর নানা রূপ আমাদের ঘটমান দুনিয়ায় রয়ে গেছে।এটা এমন যে, মানুষ তার দেখা, শোনা আর কল্পনায় যৌক্তিকতা আরোপে বাধ্য। যেমন-একজন বাচ্চা যদি তার ঘরের জিনিস পত্র উড়তে দেখে- একজন বড় মানুষ তা দেখতে পারেন না। দেখলেও তিনি একে যৌক্তিকতা দ্বারা ব্যাখ্যা করবেন। সুপারহিরোর কেরামতিতে ধর্মীয় আখ্যান খোলামেলা নয়। এর পেছনে আছে পশ্চিমা জ্ঞানকান্ডীয় রূপান্তর। যেমন- প্রমিথিউস বা হারকিউলিস এখন আর সুপারহিরো নয়। ধর্ম/মিথ আর রাজনৈতিক পার্থক্যটুকু আধুনিক জীবন-যাপনের মধ্যে স্পষ্ট। কিন্তু ধর্মের নির্যাসটুকু হারিয়ে যায় নাই।
সুপারহিরোর জয়ী হবার পেছনে মানুষের মনস্তত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানুষের মনে বিদ্যমান আদিম ভয় হলো সে এই জগতে পতিত বা ধর্মীয়ভাবে মানুষ স্বভাবত পাপী। সে নিজেকে নিজে উদ্ধার করতে পারে না। তাকে উদ্ধার করতে গায়েবী ত্রাণকর্তা দরকার। অলৌকিক ক্ষমতাধারী নবীর যুগ শেষ- কিন্তু অতিপ্রাকৃত ক্ষমতাধরের দরকার শেষ হয় নাই। সে দিক থেকে সুপারহিরোতে মানসিক প্রশান্তি আর বৈজ্ঞানিক বোধবুদ্ধি ভালো প্রয়োগ ঘটে। সুপারম্যান বা অতিমানব সাধারণ মানুষের ত্রাণকর্তারূপে হাজির হবে। সে এমন শত্রুকে মোকাবেলা করছে, যাকে মোকাবেলার হিম্মত মানুষের সাধারণ শক্তি ও বুদ্ধিতে নাই। এমনকি যে দার্শনিক মনে করেন ‘ঈশ্বর মারা গেছেন’, তারও একজন ত্রাণকর্তার দরকার হয়। এই মেসেনিক ধারনা প্রতিটি ধর্ম ও মিথের মর্মমূলে বিদ্যমান।
ধর্মীয় কাহিনীগুলোতে ঈশ্বরের শক্তির বিপরীতে অশুভ শক্তি পাওয়া যায়। ক্রাইস্টের বিপরীতে এন্টি ক্রাইস্ট, পারসিক ধর্মে খোদা আহুরা মাজদা ও শয়তান অহির্মন (গুনগতভাবে সেমেটিক ধারণা থেকে ভিন্ন)বা মাহাদীর বিপরীতে দাজ্জাল। মানুষের চেতন-অচেতনে ধর্মভাব বিদ্যমান। কর্তাসত্ত্বার ধারণাটিও অন্য অনেক কিছূর চেয়ে ধর্ম দিয়ে ব্যাখ্যা করা সহজ। এর সাথে দুনিয়ার পরিবেশগত ও যান্ত্রিক অধপতনকেও ব্যাখ্যা করতে হয়। সুপারহিরোর মুভিতে মানুষের পাপকেই ভিলেনের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। ভারসাম্য হারানো দুনিয়াকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে শুভ শক্তির দরকার হয়। খৃষ্ট ধর্মে দুনিয়াকে পাপমুক্ত করতে যিশু আত্মদান করে গেছেন। আবার আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একইসাথে খৃষ্ট ও ইসলাম ধর্মে মাহাদীর ধারণা আছে। ইহুদী ধর্মেও আছে। হিন্দু ধর্মে তো স্বয়ং ঈশ্বর মনুষ্যরূপে দুনিয়াকে বাচাতে আসেন।
১৯৩৮ সালে সুপারম্যানের (জেরি সিগলের লেখায় ছকি আকেঁন জো সুস্টার, প্রকাশক মার্ভেল কমিকস) প্রথম কমিকস বইটি বাজারে আসে। এটি কমিকসকে ইন্ডাষ্ট্রিতে পরিণত করতে বড় ভূমিকা রাখে। প্রথম যুগের কমিকস প্রকাশকরা বলত মিরাকলের চাহিদার শেষ হয় নাই, তাই তাদের ব্যবসা হবে মিরাকল কেন্দ্রিক। দুনিয়া জোড়া বিখ্যাত সুপারহিরোদের কয়েকজন হলেন ক্যাপ্টেন আমেরিকা, হিম্যান, সুপারম্যান, স্পাইডার ম্যান, ব্যাটম্যান, আয়রনম্যান, কেট উওম্যান,আয়রনম্যান, হ্যানকক, হ্যারিপটার বা নিও- এরা সামনের সারির সুপারহিরো। এইসব নানা কিসিমের এলেমদার চরিত্র অচিরে বিনোদন জগতের সবচেয়ে বড় ঝলকানি সিনেমার পর্দায় ঢুকে পড়েছে। সুপারহিরোর কতৃত্বে ছেলেমানুষী থেকে বড়মানুষীতে রূপান্তর ঘটেছে, তাই একে যৌক্তিক দেখানোর নানা কায়দা আবিস্কৃত হয়েছে। এছাড়া যেহেতু ধর্মের যুগ না, তাই অতিমানবীয় শক্তির ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের উপর বা যন্ত্রপাতির উপর ভর দিয়ে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। খেয়াল করলেই দেখা যাবে ব্যাটম্যান বা স্পাইডারম্যানের সর্বশেষ ইন্সটলেশনগুলোকে আগের পর্বের চেয়ে আরো বেশি করে যৌক্তিকতা ও বিজ্ঞানে জোর দেয়া হয়েছে।
Peter Coogan তার Superhero: The Secret Origin of a Genre (২০০৬)বইয়ে সুপারহিরোদের একটা ফর্মুলা আকেঁন। সেটা হলা “MPI”: mission, powers, and iconic identity. সুপারহিরোদের সুনির্দিষ্ট মিশন থাকে, সেটা হলো দুষ্টের দমন করে এবং সুনির্দিষ্ট কোন পক্ষের হয়ে কাজ করে। সে কাজে তাদের থাকবে অলৌকিক ক্ষমতা। সর্বশেষে শারিরীকভাবে চিহ্রিত করার কৌশল (যেমন বিশেষ ধরণের পোশাক)।এই ফর্মুলাকে যিশুর সাথে মিলিয়ে দেখতে পারেন।
চমৎকার উদাহরণ টানা যায় দ্যা ম্যাট্রিক্স ট্রিলজি (নিজেদের একই নামে উপন্যাস থেকে ল্যারি ও এন্ডি ওয়াস্ককি, ১৯৯৯) থেকে।এই সিনেমার নায়ক কম্পুটার প্রোগ্রামার নিও একটা গোপন দল থেকে জানতে পারেন দুনিয়ার মানুষ আসলে কম্পুটার প্রোগ্রামের জটিল জালে (অশুভ শক্তির জাল)বাস করছে। এইখান থেকে উদ্ধার করতে পারে দি ওয়ান। তারা দি ওয়ানকে (খৃষ্ট ধর্মতত্ত্বে দি ওয়ান মানে শুভ শক্তি যিশু)খুজতে থাকে। নিও হলো সেই দি ওয়ান। নিও-র ইংরেজি স্পেলিং-কে উল্টো করুন। এছাড়া একবার মরে গিয়েও নিও- যেভাবে বেচে উঠে (ঈসার পুনরুত্থান)। এই মুভিতে প্রতারক জুদাসও আছে। যে নিওকে ধরিয়ে দেয়। একই সাথে ম্যাট্রিক্সের জগত আর বাস্তব জগতের তফাত কি খৃষ্টান দার্শনিক ও ধর্মতাত্ত্বিক সেন্ট অগাস্টিনের দুই শহরের মতো (সেন্ট অগাস্টিন, সিটি অব গড)। একটা অশুভ নিয়ন্ত্রিত জগত, অপরটি ত্রাণকর্তায় করুণায় লাভ করা শুভ জগত। Glenn Yeffeth ও David Gerrold এর Taking the Red Pill: Science, Philosophy and Religion in The Matrix এই বিষয়ে দারুন একটা বই।
সুপারম্যান বা স্পাইডারম্যানের অতিমানবীয় ক্ষমতাপ্রাপ্তির ব্যাখ্যা গায়েবী। ক্ষমতাপ্রাপ্তির পর তারা প্রায়শ নবীদের মতো হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন। এদের বেশির ভাগের বাবা-মা থাকে না।তারপরের ফর্মুলাগুলো চেনা। অশুভ শক্তির (এন্টি ক্রাইস্ট) আবির্ভাব ঘটে।সুপারম্যান একবার পৃথিবী ছেড়ে ক্রিপটন গ্রহে চলে গেলেও ফিরে আসতে বাধ্য হয়। উসিলা হিসেবে গস্পেলের মতো বলে, আমি প্রতিদিন মানুষের কান্না শুনতে পাই। ২০০৮ সালে ব্যাটম্যান সিরিজের দ্যা ডার্ক নাইট (ক্রিস্টোফার নোলান)মুক্তি পাওয়াকালে Gabriel McKee তার The Gospel According to Science Fiction বইয়ে বলেন, There are inherent messianic qualities in the . . . concept of the superhero—an individual with exceptional abilities who sacrifices part of his or her life for the greater good. প্রেমের বেলায় মিলিয়ে দেখুন ম্যারি ম্যাগডালিন আর যিশুর কল্প কাহিনী। প্রেমের ক্ষেত্রে এরা এতই আনাড়ী থাকে যে, কোনভাবেই মনের কথাটা বলতে পারে না।যেমন- যিশু এবং ম্যারি ম্যাগডালিনকে সম্পর্ক প্রমান্য নয়।
সুপারহিরোর একচ্ছত্র ইমেজ তৈরী করা হলিউডের দেখাদেখি বলিউড জানান দিচ্ছে তাদেরও সুপার হিরো আছে।কিন্তু বলিউডী সুপারহিরোকে ভূত-প্রেত কিসিমের মনে হলেও- ভেতরকার মশলায় হলিউড আর বলিউড একই। তফাত হলো পর্যালোচনা কেন্দ্রিক। দীপা মেহতা’র ইংরেজীভাষিক মুভি হলিউড বলিউড (২০০২)-এর ট্যাগ লাইন হলো,সেম উড ডিফরেন্ট ট্রি।সে কথা ধরে বলা যায় সুপারহিরোর বৃক্ষ (ধর্ম/মিথ)একই হলেও একটাতে সুপার হিরো ধর্মের উদ্দীপনা নিয়ে সরাসরি হাজির, আর অন্যটিতে সেক্যুলাররূপে গ্রাহ্য। এর পেছনে দুটি জায়গার শিক্ষা-দীক্ষা, প্রযুক্তির ব্যবহার, ধর্ম, সমাজ, রাজনৈতিক পার্থক্যগুলো দৃষ্টব্য।
বৈজ্ঞানিকরূপে সত্যজিত রায়ের প্রফেসর শঙ্কুর বাইরে আরেকজন ইন্ডিয়ান চরিত্র হলেন ফরাসী লেখক জুলভার্ণের (যার মোটামুটি সব বই বাংলায় তর্জমা হয়েছে) টুয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্যা সী বা দ্যা মিস্ট্রিয়াস আইল্যান্ডের ক্যাপ্টেন নিমো। যাকে লীগ অব এক্সটাঅডিনারী জেন্টল ম্যান কমিকস বইয়ে (লেখক এন্ডি মারি ও ছবি আকেঁন কেভিন ওনীল ১৯৯৯) আরো অনেকগুলো বিখ্যাত চরিত্রের (যেমন-এলান কোয়াটারম্যান, দ্যা ইনভিজিবল ম্যান, ড্রাকুলা)সাথে পাওয়া যায়। একই নামের মুভিতে (স্টিফেন নরিংটন, ২০০৩) নিমোকে কালী পুজারীরূপে দেখানো হয়, যা জুলভার্নের উপন্যাসে ছিলো না। একই মুভিতে আর কাউকে ধর্মীয় দিক থেকে এভাবে উপস্থাপন করা হয় নাই। এই চরিত্রে ছিলেন নাসির উদ্দিন শাহ। অর্থ্যাৎ পশ্চিমে বিজ্ঞান আর পুবে ধর্ম এমনটাই ঠিক আছে। ঠিক যে ইন্ডিয়ায় সিনেমায় তাদের জীবনযাত্রাকে অনেক লিবারেল দেখালে ধর্ম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে না।সেই ভক্তি শ্রদ্ধা তাদের সুপারহিরোতে ভালোয় কাজে লেগেছে। যেমন- দ্রোনা (গোল্ডি বেহি, ২০১০) বা কৃষের মতো চরিত্রগুলো বাহ্যত ধর্মহীন সুপার হিরোর সন্ধান দেয় না।ধর্ম বা মিথের উপর আক্ষরিক অর্থে জোর দেয়।এমনকি তামিল এন্ধারান (হিন্দী রোবট,শংকর, ২০০৯) সিনেমায় দেখা যায় রোবট চিট্টি দুষ্টের দমনকালে বিষ্ণুর রূপ ধারণ করছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে ধর্ম সংগীত বাজছে। টেলিভিশন সুপারহিরো শক্তিমানের ওপর আছে ভারতের সাত দেবতার আশীর্বাদ। ইন্ডিয়ায় জনপ্রিয় হওয়া এনিমেশন মুভি মাই ফ্রেন্ড গনেশার কয়েকটা সিক্যুয়েল আছে। এছাড়া শ্রী কৃষ্ণ, লব-কুশ, অর্জুন, ছোটা ভীম খুবই জনপ্রিয় চরিত্র।
রাকেশ রোশনের কোয়ি মিল গ্যায়ার (২০০৩) নায়ক রোহিত । কোয়ি মিল গ্যায়ার সিক্যুয়েল (২০০৬) কৃষ মুভির নাম ভূমিকায়ও ছিলেন ঋত্বিক রোশন। রোহিতের বাবা একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। যিনি এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগের যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এই যন্ত্র ওম শব্দটি মহাশূণ্যে ছড়িয়ে দেয়। কোয়ি মিল গ্যায়ার রোহিতের ছেলে কৃষ। এই কৃশ-কে বলা যায় হিন্দী সিনেমার সবচেয়ে আবেদনময় সুপারহিরো।প্রথম মুভিতে দেখা যায় কৃষর বাবা রোহিত জম্ম থেকেই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। কিন্তু সুর্যের আলোখেকো জাদু নামের এলিয়েন তাকে বুদ্ধিমান করে তোলে। এই যেন দেবতার আর্শীবাদ। এমনকি শরীরবৃত্তিয় ব্যাপারগুলোর পরিবর্তন ঘটে। সে প্রেমেও পড়ে! এই ধরণের অচিন বিজ্ঞানের প্রয়োগ রা.ওয়ানেও আছে। সে ক্ষমতা কৃষের মধ্যে বংশানুক্রমিকভাবে প্রকাশিত হয়। কি করে জাদু রোহিতকে বুদ্ধিমান ও শক্তিমান করে তোলে তার কোন ব্যাখ্যা নাই।এটা জাদু বা মিরাকলও বটে। অন্যদিকে কৃষে দেখা যায় রোহিত ভবিষ্যত দেখার যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু ভিলেন তাকে আটকে রাখে । এরমধ্যে আশ্চর্য প্রতিভাদারী কৃষের জম্ম। রোহিতকে আটকে রাখা শত্রুর ভয়ে দাদী কৃষকে নিয়ে অনেক দূরে পালিয়ে যায়। অনেকদিন পর কৃষ যখন বাবাকে উদ্ধার করে, ততদিনে ভিলেন ভবিষ্যত দেখার যন্ত্রের মধ্যে দেখে কৃষের হাতে তার মৃত্যু ঘটছে।
এবার শ্রীকৃষ্ণের জম্মের সাথে মিলে যায় কি না। কৃষকে নিয়ে তার দাদীর পালিয়ে বেড়ায়, অপর দিকে তার বাবার ভিলেনের হাতে বন্দী। একইভাবে শ্রীকৃষ্ণের আখ্যানে কংস আগেই তার ভবিষ্যত জেনে যাচ্ছে।আর কৃষ নামটা কোত্থেকে আসছে। সহজে অনুমেয়।শ্রীকৃষ্ণের জম্ম বৃত্তান্ত- কৃষ্ণ যাদব-রাজধানী মথুরার রাজপরিবারের বসুদেব ও দেবকীর অষ্টম পুত্র। কংস তাঁদের পিতা উগ্রসেনকে বন্দী করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। একটি দৈববাণীর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তানের হাতে তাঁর মৃত্যু হবে। এই কথা শুনে তিনি দেবকী ও বসুদেবকে কারারুদ্ধ করেন এবং তাঁদের প্রথম ছয় পুত্রকে হত্যা করেন। দেবকী তাঁর সপ্তম গর্ভ রোহিণীকে প্রদান করলে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন।
২০০৮ সালে শাহরুখ খানের উচ্চবিলাসী প্রজেক্ট ছিলো মাই নেম ইজ খান। সেই সিনেমার মতো মাল্টিরিলিজিয়াস শাহরুখকে নিয়ে স্টার ওয়ান নির্মিত ডকুমেন্টরীতে দেখা যায় তার বাড়িতে নামাজ কালামের পাশাপাশি পুজা-আচ্চনা করছেন।সেই শাহরুখ খানের রা.ওয়ান-এ একই সাথে হিন্দু ধর্ম আর খৃষ্ট ধর্মের মাখামাখি। রা.ওয়ান মানে রাবন। রাবন বধের উৎসবও এই সিনেমায় দেখানো আছে। রা.ওয়ানকে মেরে ফেললেও আবার জম্ম নেয়। মজাদার হলো, এই রা.ওয়ান চরিত্র হলো আধুনিক ভিডিও গেম পছন্দ করা বাচ্চার আবদার। সে এমন ভিলেন চায়, যে অনেক বেশি শক্তিশালী।মাথা কাটলেও যেমন রাবনের মাথা আবার গজায় রা.ওয়ানের একই অবস্থা। অনেকটা যেন আধুনিক মানুষের খারাপ দিকটাই ধারণ করছে এই রা.ওয়ান। যেমন যিশু দুনিয়ার সকল অশুভকে নিজের কাধে চাপিয়েছেন।রা.ওয়ান-কে মেরে ফেলা যেন দুনিয়ার মানুষের দিল সাফ করা।একই সাথে ভিডিও গেমস খেলা বাচ্চারা ভিলেনকে মেরে নিজের দিল সাফ করছে।
যিশুর মতোই রা.ওয়ানকে মারতে হলে আত্মোৎসর্গ দরকার। অর্থ্যাৎ, শুভ শক্তি জি.ওয়ানকেও (গুড ওয়ান) মরতে হবে। মানব জাতিকে মুক্ত করতে জি.ওয়ান নিজেকে কুরবানী দেন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। মুভি শেষে দেখা যায় জি.ওয়ান পুনরায় ফিরে এসেছে। এখন বলা হচ্ছে এই সুপারহিরোকে নতুন মুভিতে দেখা যাবে। স্পষ্টত:ইন্ডিয়া সুপার হিরোর আপাত সেক্যুলার ইমেজ তৈয়ার করতে পারে নাই। তার পেছনে ইন্ডিয়ার বাজার, ভোক্তার রুচি এবং জাতিকেন্দ্রিক সমচেতনা কাজ করে।
এছাড়া ভুত-প্রেতের কাহিনীগুলোও প্রযুক্তির হাত ধরে নতুন ফর্মে হাজির হয়েছে। যেমন- টুয়ালাইট। এফডিসি-তে নির্মিত বেদের মেয়ে জোসনার চেয়ে উন্নত কোন চরিত্র না হলেও ভ্যাম্পায়ার মোটামুটি দুনিয়াকে মাতিয়ে দিয়েছে। এর উন্নত ভার্সান ধরা যায় কল্প-বিজ্ঞান মুভিকে। অধিভৌতিক কাহিনীর নিজস্ব লজিক থাকে- যেটা সহসা পর্যবেক্ষনের মানদন্ডে নির্ধারিত নয়। এমনকি যৌক্তিক আকারে দেখানো যায় না বলে পুরানো পালা-কেচ্ছা কাহিনীকে প্রান্তিক বা লোকায়ত বলা হচ্ছে। সেখানে বলা হয় কল্পবিজ্ঞানের লজিক খোলামেলা। কিন্তু এখানেই কি শেষ! স্টার ওয়ার্সের মিথিক মুখোশের ব্যবহার কিসের চিহৃ বহন করে। এইসব নিয়ে ডেভিড ক্যাম্বেলের দারুন কিছু কথা আছে।এই বিষয়ে তার The Hero with a Thousand Faces এবং Power of Myth (বিল ময়ার্সকে দেয়া টিভি সাক্ষাৎকার সংকলন, অনুবাদ: খালেকুজ্জামান ইলিয়াস, ঐতিহ্য) বই দুটি উল্লেখযোগ্য।
সেক্যুলারিজমের পোশাক পরে আছে সুপারহিরোর মালিক রাষ্ট্রগুলো। কিন্তু সে সব দেশের সিনেমা ও টিভি সিরিয়াল এমনকি রিয়েলিটি শোগুলো দেখলে বুঝা যায় সমাজ জীবনে ধর্মের প্রভাব কেমন। এর রাজনৈতিক বিচারটা আপাতত সামান্য বলছি।বাংলাদেশে সেক্যুলারিজম মানে প্রায়শ ধর্মরিপেক্ষতাবাদ বা ধর্মহীনতা বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ জ্ঞানতত্তের সেক্যুলার ও রাজনীতির সেক্যুলারিজমের বেড়ে উঠা ইউরোপের যে আধুনিকতায়,সেই সংজ্ঞার দিক থেকে এটা শুধুমাত্র ইহাজাগতিকতাকেই নির্দেশ করে।আধুনিক রাজনৈতিক অর্থশাস্ত্রে বা বিশ্ব পুজিঁর দুনিয়ায় সেক্যুলারিজমের দোহাই মানে ধর্মহীনতা নয়। বরং বিচ্ছিন্ন ব্যক্তির মধ্যে সমচেতনা তৈরি করা ও বাণিজ্য লাভালাভির দিকটা গুরুত্বপূর্ণ।
ধর্ম এখানে ধর্ম বলেই বিকোয় না বরং পুজি নিজেই সবকিছুর মতো ধর্মকে বেচাবিক্রির উপযোগী করে তোলে। শুভ-অশুভের এই বাণিজ্য নানাভাবে চলছে। এখানে আদিম ভয় নানা উৎপাদনে বাচে। একই সাথে অর্থনৈতিক পরাশক্তির দিক থেকে সুপারহিরো অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে কোন নির্দিষ্ট স্বার্থই সংরক্ষণ করে। যেমন- সুপারম্যান আমেরিকার কালচারার আইকন। এর মিশন, শক্তি এবং আইকনিক আইডেন্টিটিও সীমাবদ্ধ। শুধুমাত্র মিথিক বা ধর্মীয় জিনিস বলে কাছাকাছি সময়ে এটা অগ্রহনযোগ্য হবে, এমন মনে হয় না। বরং মানুষের নিজের অস্তিত্ত্বের ভয়-সংকট এখানে মুখ্য। কোন মত বা বাদকে সেই ভয়কে সামাল দিয়ে রাখতে পারছে না। সেই ভয়কে সামলে রাখতে সুপারহিরোকে (২০১২ সালে স্পাইডার ম্যান, ব্যাট ম্যানের নতুন সিক্যুয়েল আসছে) আমরা আরো নানাভাবে দেখবো। সে হিশেবে সুপারহিরোরা আরো অনেকদিন শাসন করবেন রূপালী পর্দার জগত।
……………………………………………………………………………………………………
লাল জীপের ডায়েরী ব্লগে এই লেখা সম্পর্কিত মন্তব্য ও তার উত্তর-
Interesting but I have something to say regarding this.
After reading the article I honestly tried to find the reasons why I like super hero specially “THE SUPERMAN”:
01. It’s a great story. May be it has some resemblance with religious thoughts but if we think of the religious story from the perspective of human nature, we can’t miss the emotion, devotion and the loneliness of human being. That made those great literatures. But my point is I like comic or superhero not to be saved but to have a taste of adventure.
02. Secondly in my childhood and sometimes in these days I think myself as one of them (superhero). If this hypothesis is correct, then I myself imagine as a prophet. But I know, I certainly don’t imagine myself as a mutant who has fallen in love with kitty pride to think that I am a savior and human civilization requires to be saved by me. I do that for fun and for fun, million children and adults read comic, a space to think “everything is possible”. Is this has any resemblance with religion where you can’t love another human being without judging him whether he is following the same cult like me. Around the world people read it for fun, for pure fun.
03. If the writer intended to plot the comic like religious books, I have to say he has failed terrible. Because nobody gives a shit superman act like jesus or not. They just amazed by the action, and dialogue far more sophisticated than many books, advance technological thinking like people are going through worm portals, going parallel universes and exploring some extreme psychological issues……..how good you can be and how bad you can be or mixture of that how pathetic our daily life can be.
04. Actually comic can sometimes depict the real issues of our life. If you want to see hitler and why he was crazy….many characters in comic books are like this. Sadist, psychopath, cynical, pathetic, ordinary, glamorous what you want..you name it you will have it.
05. Why are these comics so famous than many dramas, novels??? Because in many psychological issues, and depicting the environment, character, bringing turn and twist in the plot writer of these comics were and are far more skilled than many established pure drama/novel writers. That’s why these characters are so alive, and still in their youth. You want a complex character, what can be more complex than “BATMAN”.
06. From the begin of the human history, people who were developed in technology, war, knowledge, literature, diplomacy, and mostly in their head, ruled rest of the people. It became our bad habit to predict everything is created in controlled environment. Firstly if I consider a guy who thought it could be a great story…then the era of comic began and it ruled and is ruling cause in that “everything is possible”. That is the essence of freedom and a contrary to religion.
07. And for American icon issue, we use net, mobile, many technological advancement in our daily life, for which directly or indirectly American has contributed a great deal. They now have the torch of technology, so to advance our life we don’t have any other way but to follow them. By using net if anybody post a sign, “caution! American trying to rule the world”. He is too late to say that already we are living in a world which is developed by the AMERICAN (WEST). We atleast need to show some gratitude while we are in the system or developed yourself a system.
ওয়াহিদ সুজন
Shamu দেরীতে হলেও প্রথমেই ধন্যবাদ জানিয়ে রাখি বিশাল মন্তব্যের জন্য।
আপনার মন্তব্য আমার জন্য উৎসাহব্যঞ্জক।
এই পোষ্ট কমিকস সম্পর্কে যে কথাটা বলেছে সেটা সারধর্মের দিক থেকে। এখন একটা কমিকমস চরিত্রকে বাহ্য কিভাবে দেখেন সেটা নির্ধারিত হবে আপনার চারপাশের জ্ঞানকান্ড্ ও প্রযুক্তি দিক দ্বারা। এটা আপনাকে ধর্ম দিয়ে বুঝাতে হবে তার কোন কারণ নাই। এখানে কমিকসের প্রেরণায় মিরাকল- সেটা ধরে সুপারহিরো মুভি নিয়ে কথা তোলা হয়েছে। এবং কথা তোলা হয়েছে তাদের মিশন, শক্তি আর আইকনিক পরিচয়ের দিক থেকে।
কমিকসের লটস অব ফান বা অল পজিবিলিটিকে উড়িয়ে দেয়া হয় নাই কোথাও। এই যে অল পজিবিলিটির সম্ভাবনা তাও আবার যৌক্তিক জগত কাঠামোর মধ্যে নির্মিত। সেই নির্মিতি রূপকথার মতো নয়। সুতরাং, এই ফানের ‘জ্ঞানগত’ অর্থ নানাভাবে করা যায়। কিন্তু ফান’ তো দুনিয়ার ইতিহাস বা মানব চৈতন্যের বাইরে কোথাও তৈরি হয় নাই বা ‘ফান’ বলে গ্রাহ্য হয় না। বরং, বুড়ো পৃথিবীর ইতিহাসই তাকে রস সরবারহ করে। বিনোদন তো দর্শক মনোস্তত্ব নির্ভরই। তার মানে কি বিনোদন এই ঘটনামান দুনিয়া থেকে বাইরের কিছু। এখন ভোক্তা মর্জি মত এটা ইউজ করতে পারে।একই কাল্ট ছাড়াও যে ভালোবাসা সে কথা নানা ধর্মে ঢের আছে। ধর্মকে এতো ঠুনকো ভাবার কারণ নাই।
এই ‘নোবডি’ কে সেটা স্পষ্ট না।এটা কি সমগ্র না বিশেষ। কিন্তু কালেক্টটিভ মাইন্ডে ধর্ম আগে থেকে হাজির। ধর্ম নাম দেখেই ভয় পাওয়ার কি আছে। ধর্ম আর ‘ফান’র বিরোধ কি? আমি যখন যেসাসের মতো কারো কথা বলব, তাকে গায়ে-গতরে স্বভাবে একজন যেসাস হতে হবে এমনই কি! এই কাহিনীগুলোর মিথিক দিকগুলো নিয়ে চিন্তা করেন। আমাদের এখানে যখন বলা হয় এখনো নারীরা বেহুলার মতো, তার মানে কি সে বেহুলা, নাকি সমাজের বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যেই বেহুলা হবার বাস্তবতা বিদ্যমান।।
এই লেখায় স্পষ্ট করা আছে এটা সুপারহিরো কেন্দ্রিক। একজন সাডিষ্ট চরিত্রকে নিশ্চয় সুপারহিরো বলা যায় না। যা শুধুমাত্র ধর্ম সম্পর্কিত সে পর্যালোচনা এর বিষয়বস্তু। এখন ব্যতিক্রমটুকু অন্যভাবে আলোচিত হতে পারে। আর এই আলোচনা মূলত বড় পর্দা কেন্দ্রিক। সামনে সুপারহিরোর রাজনীতি নিয়ে কিছু বলতে চায়।
উপন্যাস না কমিকস এই তুলনা কেন? সবাই নিশ্চয় জেমস জয়েস পছন্দ করে না, যেমনি ব্যাটম্যানও! এটাকে ট্রেন্ড মাষ্টার’রা এক ধরণের বলতে পারে। কিন্তু রেফারেন্স উল্লেখ করা ছাড়াই বলছি কমিকসের স্থায়ীত্ব নোবেলর চেয়ে বেশি না। সুপারহিরো সবসময় বেচে থাকে এবং তারুন্যদীপ্ত। মিথ আর ধর্ম ছাড়া এই জিনিস কোথায় পাবেন। আপনার কথা ধরেই বলছি যে ‘ফান’ বা ‘পজিলিটি’-সেটা ধর্মীয় বাতাবরণ ছাড়া সম্ভব না, সেটা মানুষ সহজে ভুলে যায়। কিন্তু তার একটা রেশ থেকে যায়।
মন্দ অভ্যাস বা ব্যাড হেবিট- এটা নৈতিক শব্দ।আমার মতো করে কেউ দেখে না- তাই সেটাকে খারাপ বলতে হবে। এর কোন মানেই হয় না। স্বাধীনতাকে অবসুলিউটভাবে বুঝা সম্ভব কিভাবে! সে জায়গায় আপনার ‘পজিবিলিটি’র উদাহরণই মানানসই। ফ্রিডম আর ধর্ম, কারো এসেন্সই শর্তের বাইরে নয়। এই যে ফ্রিডম নিজেই তার পরিচয়ের জন্য একটা শব্দের শর্তে বন্দী। কোন সুপারহিরোয় অসীমভাবে স্বাধীন নয়, সে চাইলেই সবকিছু মতো করতে পারে না অথবা করতে না পারার ঝুকি নেয় না। এবং তার ক্ষমতা কোন স্বাধীন পছন্দের বিষয় নয়। সে এটা কারো তরফ থেকে পেয়েছে।
আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানালাম। তো, এরমধ্য দিয়ে হলো। তাদের পণ্য কিনে নিতে হচ্ছে- তাই তাদের রীতিনীতির ক্রিটিক করা যাবে না। এবার কি দুনিয়ার উপর আমেরিকার খবরদারি বন্ধ হয়ে গেলো। নানা জায়গায় বোমা মারা বন্ধ করবে? ফিলিস্তনী অধিকার আদায়ে আর ভেটো দেবে না। এটা কোন সমালোচনামূলক পোষ্ট না-ধর্মীয় কাঠামোয় বেড়ে উঠা আমেরিকার সুপারহিরোর সাথে নতুন গজিয়ে তোলা পরাশক্তি ইন্ডিয়ার সুপারহিরো তুলনা, প্রতিতুলনা ও এর পেছনে বিদ্যমান মানুষের স্বভাবগত ধর্ম চেতনার বিশ্লেষন।বুঝা যাচ্ছে, আপনি কমিকস ভক্ত- এটা কমিকসবিরোধী বা কমিকসকে হেয় করার জন্য লেখা না।
আপনি এটাকে ফান পোষ্ট হিসেবে নিতে পারেন।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
সামহোয়ার ইন ব্লগ থেকে নির্বাচিত মন্তব্য:
জংলি জানোয়ার বলেছেন: বাংলা সুপারম্যান হইছিল একটা, ওইটাতে নায়ক ছিল ড্যেনি সিডাক । ওইটাতে একশন গুলা ইংরেজি সুপারম্যান সিনেমার কাটপিস হইলেও , একটা ধর্মীয় ইঙ্গিত ছিল । দৃশ্যটা ছিল এরকম যে , বাচ্চা সুপারম্যানকে স্কুলে প্রশ্ন করা হয়” পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব কে ?”
সুপারম্যান উত্তর দেয় “হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)”।
——————————————
অনেক ভাল লাগলো পড়ে !
এতো বড়@!!
আরে সর্বনাশ। লেখাটা আরো বড়ো হবার কথা ছিলো।
সুজন ভাই, লেখাটা পড়ে ভালো লাগল। ভাই, আমি যদি আপনার এই লেখাটা আমার ব্লগে পাব্লিস করি কোনো সমস্যা বা আপত্তি কি আছে আপনার? আপনি আমার ব্লগটা দেখবেন, যদি আপত্তি না থাকে তবে আপনার এই লেখাটা আমি নিতে চাই…[http://laljiperdiary.wordpress.com/]
ধন্যবাদ ভাইয়া।
না, কোন আপত্তি নাই। আমার নামের সাথে ব্লগ ইউআরএল উল্লেখ করে দিয়েন।