শব্দান্ধ সন্ধ্যা এবঙ তুমি

মেঘলা আকাশ। দিনমানে সন্ধ্যা হয়ে এলো। ধূসর তার দিগন্ত। অসীম দূরত্ব পেরিয়ে রাত্রি এলো শব্দের নিরবতায়। প্রতিক্ষার বিকিকিনি শেষ হলো। রাত্রি যেন ভোরের প্রতিচ্ছবি। আমি একা এবঙ একটি প্রজাপতি। রাত্ভর মেঘ আর বিদ্যুতের আনাগোনা। বৃষ্টি আর ঝরে না। ‍‍‘মেঘ তুমি দূরে কেন? বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ো’। সে বলে, ‘মেঘই ভালো’। হয়তো পাখনা মেলে ভেসে থাকতে…

ঘুম পাড়ানী গান

এক. আমার মা … মা আমায় গানে গানে ঘুম পাড়াতেন। ক্লান্তি— আর মায়াতে মাখামাখি। এই বেলায়, আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি, ঘুম পাড়ানী গান মনে করার। আমি শুধু দিগন্ত বরাবর হাটি। কিন্তু সেই দিগন্ত দূর থেকে দূরে সরে যায়। আমি কখনো সেই গানটি মনে করতে পারি না। যদি কখনো পৌছতে পারি- আকাশ আর মাটি যেখানটায় এক…

একটি অনন্ত সম্পর্কের সম্ভাবনা

এক. সবকিছুর নিজস্ব গন্ধ আছে। কিছু তীব্র আর কিছু হালকা। মৃত্যুর গন্ধ সবচেয়ে বেশী তীব্র, যেমনি তীব্র প্রেম-ভালোবাসা। কোনটাই গোপন থাকে না। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যেমনটি করে আমার বাবা অতিদ্রুত জেনে গেলেন দাদাজানের মৃত্যু সংবাদ। বাদ আছর দাফনের সময় ধার্য করা হয়েছে। এখন রওয়ানা হলে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌছতে আমাদের সমস্যা হবার কথা না।…

চৈত্রের মাতাল দিনে

এক-দুই, তিন-চার-পাচ-ছয়, সাত-আট, নয়, দশ… না এগারো, বারোও হতে পারে। আহা, জট পাকিয়ে গেলো। একের পর এক কাক উড়ে এসে বসছে আবার চলে যাচ্ছে। রহিম বাদশার মাথার ভেতর সংখ্যাগুলো কিলবিল করতে থাকে। কোনটা কেচোর মতো আর কোনটা জোকের মতো। কোনটা অতি সুক্ষ্ণ, কোনটা জটিল। কোনটা লাল, কোনটা নীল। কোনটা যেন মাছির মতো ভো ভো শব্দ…

ভব নদী

একটা নদী। দূর কোন পর্বত থেকে নেমে আসে। তারপর কতো কতো পথ পাড়ি দেয়। কতো জনপদ। কতো বিরাণ ভূমি। কতো শূনতা-কতো বিপুলা তার অপেক্ষায় থাকে। একটা নদী একটা বৃহৎ স্বপ্ন। একটা নদী কতো কতো গন্তব্য তৈয়ার করে। সেই হদিস নদী নিজেও রাখে না। গন্তব্যের হদিস রাখে পথের পথিক। পথিক ছাড়া কার দবকার পথের দিশা। অথবা…

নির্ঘুম মেঘের দেশে

আমার ছোট্ট কলার ভেলাটি জলে কোন আলোড়ন না তুলেই চলছিল দূর কোন দেশে। আর মানুষটা ভেলার পাশ ঘেষে ভাসছিল। সেও কি আমার মতো নিরুদ্দেশ যাত্রায় বেরিয়েছে। উছলে পড়া আলোর সমুদ্দুরে খুব আরাম করে হাত-পা ছড়িয়ে আছে। একবার মনে হলো মৎস্য কন্যা। আবার মনে হচ্ছিল পাখি। এই বুঝি হয়ে ডানা মেলে আকাশে উড়াল দেবে। গায়ে তার…