রাফখাতা

ইউসুফজুলেখা

ইউসুফ তো বানু জুলেখার অভিযোগ মাথায় নিয়া জেলে গেলেন। দুনিয়ার বন্দিত্বের বিপরীতে জেলখানায় মুক্তির তালাশ করলেন তিনি। ব্যাপারটা জুলেখাকে আরো রাগিয়ে দিল। সিদ্ধান্ত নিলেন ইউসুফের উপ্রে নির্যাতনের ব্যবস্থা করবেন। তো, এইটাও ইউসুফ মাইনা নিলেন। শরমিন্দা হইলেন জেলার। জুলেখা এরপর কী করে সেটাই দেখার বিষয়। জুলেখাকে মনে হইতেছে আগ্নেয়গিরি— নিজের আগুনেই ছারখার। অন্যদিকে ইউসুফ যেন মহাসমুদ্র। শান্ত, শীতল ও মুগ্ধকর। পাশাপাশি একই জেলে বন্দি আছে রাজাকে যারা অর্ধ-ঈশ্বর মানেন না তাদের কেউ কেউ, তারা হলেন আমন দেবতার পুজারী। আর কিছু দুর্বল মানুষ। তারা দুনিয়ার সব জায়গায় নির্যাতিত। জেলে ঢুকেই নির্যাতিতদের পক্ষ নিলেন ইউসুফ।

২০ জানুয়ারি ২০১৭

ইউসুফজুলেখা

ইরানি সিরিয়াল ‘ইউসুফ-জুলেখা’ অনুসারে ইউসুফকে যখন জেলখানার ভয় দেখানো হলো— তিনি জানালেন, বানু জুলেখা ও অন্যান্য নারীর ষড়যন্ত্রের চেয়ে বড় জেলখানা আর নাই। বরং জেলখানায় গিয়াই তিনি মুক্তি পাবেন। এছাড়া অভিযোগ ভূয়া হলেও ইউসুফের শাস্তি না হইলে জুলেখার তো সম্মান থাকে না। তারে জুলেখার সম্মানও বাঁচাইতে হবে। আহা! ইউসুফের তো সম্মান নামের এমন মেকি জিনিসের দরকার পড়ে নাই। তাকে সম্মানিত করেছেন খোদা।

১৯ জানুয়ারি ২০১৭

এবসিলিউট বাদাম

খেয়া মেজবারে নিয়া অনেক স্মৃতি থাকার কথা। বাট মতিঝিলে খোলা আকাশের নিচে কুয়াশা-শীতল হাওয়া মিলায়া পিঠা খা্ওয়া ছাড়া কিছুই মনে আসতেছে না। উনার সঙ্গে মোটামুটি এক বছর পর দেখা হলো। আগের মতো ব্যস্ততা! দেখলাম চুলের কাট চেঞ্জ করছেন। মাস কয়েক আগের একটা ছবিতে দেখছিলাম রওশন আরা মুক্তা্ও হেয়ার কাট বদলাইছেন। মুক্তার হাতের মজার মজার রান্না খাইছিলাম। শুধু ঝাল ঝাল গরুর মাংসটা এখনো পাওনা রয়ে গেছে। এই দুই নারী যারা এবসিলিউট বাদামের মতো অবস্ট্রাক জিনিসের তালাশ করেন, তারা কেমন যেন বিমূর্ত। বিশেষভাবে ধরা যাইতেছে না! কী জটিল স্ট্যাটাস হইলো।

১৮ জানুয়ারি ২০১৭

জীবন!

তিনদিন জ্বরে ভোগার পর ঘুমের ঔষধ খেয়েও পরের তিনদিন ঘুম আসে নাই। বাসের দুলুনিতে হালকা ঘুম আসত শুধু। এরপর দুইদিন অল্প অল্প ঘুমাতে পারতাম। তাড়া করত নানান ধরনের স্বপ্ন। জেগে জেগে উঠতাম। কোনো কিছুই ভাল্লাগছিল না। আজ অফিসের নিচতলায় আগুন লাগায় আটকে পড়েছিলাম ১২ বা ১৩ তলায়। পাশের বিল্ডিংয়ের লোকেরা আমাদের উদ্ধার করে। আগুন দেখি নাই— কিন্তু ধোয়া কতটা বিভৎস ও ভীতিকর হতে পারে টের পেলাম। গলা জ্বলছে এখনো। এখন মনে হচ্ছে— এর কোনোটা দিয়েই জীবনের অর্থ মাপতে পারি নাই। জানি না তার জন্য কতদূর যেতে হবে।

৯ জানুয়ারি ২০১৭

মারজান। কোত্থেকে আসেন। কোথায় যান?

৫ জানুয়ারি ২০১৭

র-তে যদি ‘রথ টানি’ হয়, ন-তে কি ‘নামাজ পড়ি’ হবে?

২ জানুয়ারি ২০১৭

জ্বরায়িত খ্রিস্টিয় নববর্ষ!!

নতুন বছর বলতে যা বুঝতাম– এক জানুয়ারি ইস্কুলে গিয়া ঘুরে আসা। দুই-একটা ক্লাস হইতো। কঠিন টিচারও মিষ্টি কথা বলতেন। তারপর বাসায় চলে আসতাম। আজিকা জ্বরে জর্জরিত হয়া ইস্কুলে যাইতে ইচ্ছে করছে। কেউ মিষ্টি মিষ্টি কথা বলুক। তারপর জামা ময়লা করে ঘরে ফিরব। দুই-একদিন পর বাবার সঙ্গে আন্দরকিল্লা যাবো– বইপত্র কিনা আনব। আসার পথে তিন গোয়েন্দার বায়না করব। বাবা কটমট করে তাকাবেন। কিন্তু ঠিকই বইয়ের দোকানে ঢুকবেন। এ সুযোগে একটার বদলে তিনটা বই বগলদাবা করলাম। কী খুশি!

৩১ ডিসেম্বর ২০১৬

ইত্যাদি : মিষ্টির মধ্যে ট্যাবলেট নাই এখন

অনেকদিন পর ইত্যাদি দেখলাম। দেখলাম– সব বিনোদন খসে পড়ছে, শুধু শিক্ষামূলক ব্যাপারগুলাই আছে। আগেও পুরোপুরি শিক্ষামূলক ছিল, বাট মিষ্টি মধ্যে ট্যাবলেট টাইপ। এখন ট্যাবলেটটাই আছে- মিষ্টিটা নাই। ম্যাড়ম্যাড়ে কৌতুক, কাছাকাছি কথা, সুরের, একই শিল্পী, সুরকার ও গীতিকারের গান, ও লোকজনরে সাহায্য করার ব্যাপার। তারপরও আনন্দ পেলাম। চারদিকে এতো শিক্ষার ছড়াছড়ি, আনন্দ-বেদনা সব সেখান থেকেই লইতে হবে। ইত্যাদিতে চিঠিপত্র বলে একটা ব্যাপার থাকে। যার কমন ডায়ালগ– কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এবারও তেমন ব্যাপার ছিল। এবারের অভিযোগ হাজার হাজার অনলাইন থাকা নিয়া। হানিফ সংকেত নানা বিষয়ে বাছ-বিচার না করে গড়পরতা মন্তব্য ও তামাশা করেন। তার দর্শকও এর বাইরে না। নইলে লোকে কেমনে এখনো চিঠি লেখে এভাবে। নানী-নাতি দেখলাম। কথার ভুল ধরে মানুষরে লজিক্যাল করার চেষ্টা। ভুল না থাকলে কি কথার ফুল থাকত! ইত্যাদি যদিও শিক্ষামূলক ও ভুল করা করি নিয়া বাণিজ্য– তারপরও হাসা যায়। এই তো করি খালি! একজন লোক নিজের উপ্রে বিরক্ত না হইয়া বছরের পর বছর এ জিনিস করে যাচ্ছে। জাস্ট ব্র্যান্ডভ্যালু। কী আর করা! স্যালুট।

৩০ ডিসেম্বর ২০১৬

শ্রাবণকে নিষিদ্ধ করার অনুকূল সময়

সময়টা শ্রাবণ প্রকাশনকে একুশে বইমেলায় নিষিদ্ধ করার অনুকূলে। হায় হায়! এ পরিস্থিতি কেমনে সৃষ্টি হইলো! কখন হইলো! আমরা জানলাম না। এটা স্রেফ টক শো আর ব্যানার নিয়া রাস্তায় দাঁড়ানোর ব্যাপার! স্রেফ!

২৬ ডিসেম্বর ২০১৬

গাদার এক প্রেমকথা

কী মনে কইরা পাকিস্তান ডিফেন্স পাতায় লাইক দিলাম!! ‘গাদার এক প্রেমকথা’ দেইখা উঠায়া নিতে ইচ্ছে করছে! এ ভুষিমাল নাকি একইদিন মুক্তি পাইয়া ‘লগান’র থেকে বেশি টাকা কামাইছে। এ প্রতিরক্ষা নিয়া পাকিস্তান কেমনে ঠিকা আছে! জয় হিন্দ।

২২ ডিসেম্বর ২০১৬

রক্ত জবার জন্য কান্না!

কবে যেন কিশোরগঞ্জ গেছিলাম। জুলাই অথবা আগস্টে। ঈশা খাঁর বাড়িতে দেখছিলাম রক্ত জবা ফুল। ভাঙা দেয়ালে ধারে টকটকা রক্ত জবা। ধুলোয় ঝরে ঝরে পড়ছে! অনেকদিন পর কেঁপে উঠলাম। ছোটবেলায় ঘুমের ভেতর রক্ত জবার জন্য কাঁদতাম। কেঁদে কেঁদে বলতাম, ‘কোথায় আমার রক্ত জবা?’ আমাদের বাড়ির বাইরে গেটের পাশে ছিল রক্তিম আভা। আমি তার জন্য ছিলাম— ঘুমঘোরে বিদ্রোহী। আজ কারো চেহারায় জমে থাকা লালিমা দেখে রক্ত জবার শোক আরো গভীর থেকে ডাক দিল।

২২ ডিসেম্বর ২০১৬

মাওলা

‌‘মাওলা’ শব্দটা কনফিউজিং আমার কাছে! লোকে কারে কখন কেন ‘মাওলা’ বলে বুঝি না। ‘মাওলা’র কী কারিশমা!

২২ ডিসেম্বর ২০১৬

ভঙ্গবঙ্গ!

মামুনুর রশীদকে স্টার জলসার রিয়েলিটি শো’তে দেখতে মনে চায়! সুন্দরবন রক্ষা ও সাওতাল জনগোষ্টীর অধিকার নিয়া কথা বলবেন। উপস্থিত সবাই নাক আর চোখের জলে একাকার হইতেছে। সুলেমান বন্ধ হইলে দর্শক ওইটাই দেখবে!

২০ ডিসেম্বর ২০১৬

শোক.

বেশি বেশি শোক মৃত মানুষদের আরো মৃত বানায়া রাখে। মনে হয় না তাহারা কখনো জীবিত ছিলেন। এমন সৃজনীশীলতা মানুষেরই সাজে। খানিকটা ভুল হলো হইতো। মানুষের ভাব অল্পবিস্তর আয়ত্বে আছে মাত্র, অপরাপর প্রাণীর নহে।

২০ ডিসেম্বর ২০১৬

তুবা যেদিন বলবেআমি

তুবার আর আমার চুলের বয়স একই। ২ মাস ১৬ দিন। তুবার বয়স এক বছরের সামান্য বেশি। তো, তুবা একজন মানুষ, তার নিশ্চয় ‘আমি’ বইলা একটা ব্যাপার আছে। আত্ম-সচেতনতাও। এটা সম্ভবত থাকে, বাট মালুম নাও হতে পারে। বিশেষ বয়সেও হতে পারে। তা জানি না। অন্য বাচ্চাদের মতোই বাচ্চা দেখলে বলে ‘বাবু’। একইদিন বাপের লগে তুবার ছবি তুললাম। ছবি দেইখা বাপরে ‘বাবা’ বইলা চিহ্নিত করল, নিজেরে বলল ‘বাবু’। ধন্ধে পড়লাম- এটা কি স্রেফ ‘আমি’ শব্দটারে ধরতে না পারার ব্যাপার, নাকি নিজের সম্পর্কে সচেতন না হওয়া অথবা কোনো ধরনের যৌথ চেতনায় সমর্পিত থাকা। কবে ছবি দেখে তুবা বলবে ‘আমি’। অসাধারণ এ ঘটনার অপেক্ষায় আছি।

১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

আপনার কান্ধে কিছু যন্ত্রণা দিতে চাই!

কোন এক বৃষুদবার। দুপুরে। মাছ আর রুটি হবে অন্ন। নিজেরে মনে হবে যিশুর একান্ত চ্যালা। আধো আলো আধো আধারে। আমার কান্ধে সওয়ার সকল যন্ত্রণা। আমি তা আপনার কান্ধে দিতে চাই। করুণা রাখিতে চাই আপনার তরে। যিশুরে আমি যিনি না, আমি যার ফেইক চ্যালা

১৮ ডিসেম্বর ২০১৬

শাহনাজ রহমতুল্লাহর দেশের গানে অদ্ভুত একটা ফিল আসে। গানের কথা, সুর ও কণ্ঠ মিলায়া সেই রকম।

১৬ ডিসেম্বর ২০১৬

প্রাণযখন কারো বাংলাদেশ!

‘এ প্রাণ আমার বাংলাদেশ’– কথাটা অনেক জটিল মনে হল। প্রাণের বাইরে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের বাইরে প্রাণ থাকার মতো। অথবা না থাকার মতো! অথবা স্লোগানটা কী তা-ই মালুম হচ্ছে না। তারপরও ধরে নিতে পারি ‘প্রাণ’ বলে একটা কল্পিত ব্যাপার আছে যেটা বাংলাদেশে পর্যবসিত হয়েছে। অন্য দেশের লোকেরা এ কথা বললে প্রাণে প্রাণে ভাগাভাগি মেনেই নিতে হবে! হররোজ আমাদের চেতনা জুড়ে শুদ্ধচারীতার অদ্ভুত অদ্ভুত ব্যারাম দেখা যায়। সে মতে অবশ্য বিজয়ের দিন সামনে রেখে আমাদের অনেক উন্নতি হইছে। কেউ আর প্রাণরে নোংরা বা গন্ধময় বলবে না। প্রাণে প্রাণে বিবাদ করতে পারবে না। আড়ালে থেকে যাচ্ছে– দেশপ্রেম দিয়া অনেকে হিংস্র-রক্তলোলুপতা ও অপরের অধিকার স্বীকার না করাকে জায়েজ করে। এ স্লোগান যথেষ্ট সংবেদনশীলতা ধারণ করেছে। যদিও প্রাণের মহিমা নিয়া সংশয় জারি থাকল। বাংলাদেশ থাকুক, মানুষের মনে শান্তি বিরাজ করুক। অপরের প্রতি ভালোবাসাও। এ চাওয়াও হয়তো ‘এ প্রাণ আমার বাংলাদেশ’র মতো আকাশ-কুসুম ভাবনা রইল। সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

মৃত্যুকে চিরনিদ্রা বলে ক্যান? কে নিদ্রা যায়?

১১ ডিসেম্বর ২০১৬

কোনো একদিন মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে সিনেমা হইতে পারে। সম্প্রীতির। সিনেমার নাম গাংচিল হতে পারে। সেখানে আমরা দেখবো তোহাইতের মতো শিশুরা বিজিপি’র কত আপন ছিল! তাদের আত্মা শিশুদের মতই পবিত্র! তাদের ফুলের আঘাতেই তোহাইতের মৃত্যু হয়!

৫ ডিসেম্বর ২০১৬

শুদ্ধ ব্যান্ড সঙ্গীত চর্চা

শুদ্ধ ব্যান্ড সঙ্গীত চর্চার দরকার আছে। নইলে ‘শুদ্ধতা’র দোহাইয়ে ১ ডিসেম্বর চ্যানেল আই ব্যান্ড ফেস্টের আয়োজন করল ক্যান? শুদ্ধের ঠ্যালায় প্রাণ ওষ্ঠাগত। ব্যান্ড সঙ্গীতে বিশ্রাম নেবেন তারও উপায় নাই। জিরানোর জন্য একমাত্র প্রাণ জিরাপানিই সত্য। থিম সং হিসেবে আমার সাজেশন– ‘আগুনের পরশমণি জ্বালাও প্রাণে’।

২৮ নভেম্বর ২০১৬

ঝড়ো হাওয়া

নিজেরে গুলির মুখে সমর্পন করা যেনতেন কাজ না। এটা একলগে যুদ্ধ ও আত্মহত্যায় সমর্পণও। আত্মহত্যা শুনতে কেমন লাগলেও তার মধ্যে আত্মমর্যাদার একটা ব্যাপার আছে। কানে ধরাধরির সঙ্গে আত্মমর্যাদার সম্পর্ক নাই— অন্যের মর্যাদা ফিরায়া দেওয়াও নাই। এমনকি অপরকে শুদ্ধ করার দায়ও নাই। তবে গুলির সামনে দাঁড়ানোর মধ্যে বড়সড় পরিবর্তনের ব্যাপার থাকতে পারে। বুক টানটান করে দাঁড়ানোর মতো। তখন আর মৃদৃ হাওয়া বইবে না, ঝড়ো হাওয়ায় উড়বে অনেক কিছু।

২৭ নভেম্বর ২০১৬

গাজী টিভির দৃশ্যত কম বয়সী মেয়েরা

খুবই কৌতুহলজনক চ্যানেল গাজী টিভি। যখন কোনো নাটক দেখি, এখানে আবার ভয়ের নাটক, প্রেমের নাটক বা মারপিটের নাটক নানান ব্যাপার আছে। হ্যাঁ, যখন কোনো নাটক দেখি প্রাইমটাইমে, দেখি কিছু (দৃশ্যত) কম বয়সী মেয়ে সোফায় বসে থাকে। টি-শার্ট, জিন্স টাইপ পোশাক পরে। হাত-টাত নাইড়া কথা বলে। ঝগড়া করে, খুবই তুচ্ছ বিষয় নিয়া শলা-পরামর্শ করে। নুডুলস-টুডুলস খাইতে থাকে। এসব দৃশ্য আমি আগ্রহ নিয়া দেখি। হয়তো এমন হইতে পারে অন্য যা দৃশ্য থাকে সেগুলা অন্য নাটকের বিজ্ঞাপন। ওই নাটকগুলা কখনো দেখা হয় নাই।

২৫ নভেম্বর ২০১৬

উচ্চাঙ্গ অনুভূতি!

দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ায়া উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবে যখন ঢুকলাম প্রবীণ গোদখিন্ডির বাঁশি, রাতিশ টাগডের বেহালা ও রামদাস পালসুলের তবলায় মুখরিত চারদিক। সঙ্গীতের উঠানামায় শরীরেও দোলা লাগল। ভাবতেছিলাম— এ সঙ্গীতে বাহ বাহ, মাথা নাড়া, হাততালি চলে কিন্তু কেউ নেচে উঠে না কেন? উচ্চাঙ্গসঙ্গীতেও কি অবদমন আছে? মনে-প্রাণে দোলা লাগলে শরীরও চাইতে পারে। মনে করছিলাম এরপর বিদূষী গিরিজা দেবীর গীত শুরু হবে। না, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খায়া ফেলল আধঘণ্টা। সবচেয়ে বিরক্তিকর লাগল আসাদুজ্জামান নূরের আবেগময় বক্তৃতা। হলি আর্টিজান হামলাই তার আলোচ্য। ওই ঘটনার রহস্য যদি উদঘাটন হইতো আমরা শান্তি পাইতাম, রক্তের উপ্রে দাঁড়ায়া আবেগ ছড়ানো কথাবার্তার উপ্রে না। এগুলারে এখন কথার কথাই লাগে! যাই হোক, ১০টা ৪০ নাগাদ গিরিজা দেবী আসলেন। উনার আলাপ জমতে জমতে বাইর হয়ে আসলাম। তার কণ্ঠের সুধায় চোখে পানি এসে গেল। মনে হল জীবন অনেক ছোট। তারপরও কত অনর্থ আর কোনোভাবে কাটায়া দেওয়ার এ জীবন।

২৪ নভেম্বর ২০১৬

শান্তি পুরস্কারে প্রেম

নোবেলে শান্তি পাইছে বলেই কি সুচির কাছে আমরা শান্তি আশা করি? শান্তি তো আসিতেছে টাইপ ব্যাপার। বিমূর্তও। তাইলে একই সময় শান্তি পুরস্কারের বিরোধীতা ক্যান? তবে কি বলব, এই পুরস্কার বা শান্তি নামক পদের ব্যবহারে আমাদের আশার প্রতিফলন আশা করি। এমন আশাবাদের উৎস কী?

১৯ নভেম্বর ২০১৬

কুরাইশ বংশ

ফুরফুরা দরবার শরীফের গদ্দীনশীন পীর : (আল্লামা শাইখ) আবুবকর আব্দুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী।

অন্যরা হলেন: হযরত মাওলানা আবু ইব্রাহিম মুহাম্মদ উবায়দুল্লাহ সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (মেজ হুজুর)

হযরত মাওলানা আবু তাহের মুহাম্মদ মতিউল্লাহ সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (সেজ হুজুর)

হযরত মাওলানা আবুবকর মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (ছোট হুজুর)

হযরত মোস্তফা মাদানী সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (বড় হুজুর রহ.-এর মেজ সাহেবজাদা)

হযরত আয়াতুল্লাহ সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (বড় হুজুর রহ.-এর ছোট সাহেবজাদা)

হযরত মুজাহিদ সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (সেজ হুজুর-এর বড় সাহেবজাদা)

হযরত সাওবান সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (ছোট হুজুর-এর সাহেবজাদা)

হযরত মিফতাহুল জান্নাহ্ সিদ্দিকী আল-কুরাইশী (সেজ হুজুর-এর ছোট সাহেবজাদা)

ইনারা সবাই রাসুলুল্লাজ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম এর প্রধান সাহাবী ও মুসলিম জাহানের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রহ.)-এর বংশধর এবং মুজাদ্দেদে জামান আবু বকর সিদ্দিক ফুরফুরাভী (রহ.)-এর উত্তরসূরী। ইনাদের ওয়াজ শোনা যাবে ২৭-৩০ ডিসেম্বর। গাবতলীর দারুসসালামে।

১৮ নভেম্বর ২০১৬

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী!

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে সুবর্ণ জয়ন্তীর আয়োজন। সকাল সকাল ইউনিভার্সিটি নিয়া ভাবতে বসলাম। অনেকক্ষণ পর প্রথম যে ছবি চোখে আসল তা মূলত ইস্কুলের পিকনিকের। একটা পাহাড়ের ঢালে বসে সবাই সেদ্ধ ডিম আর পাউরুটি খাচ্ছিলাম। পরণে সাদা-নীল ইউনিফর্ম। ওইটা ক্যাম্পাসের কোন এলাকা ছিল স্পষ্ট না। তারপর ফিরলাম রাত্রির দৃশ্যে। অনেক দূরে কোথাও চলে যাচ্ছি— হাওয়া কেটে কেটে এগিয়ে যাচ্ছে গাড়ি। উদ্দেশ্যহীন যাত্রা, হয়ত মন ভালো নেই। চাঁদ ছিল কি আকাশে? এরপর কুয়াশা কেটে বের হয়ে এলো একটা ভোর। পকেটভর্তি লজেন্স। বেশির ভাগ লোকজন হয় নিদ্রায়, হয়তো প্রাতকৃত্যে ব্যস্ত। আমি হাঁটতে বের হলাম। মাথায় ঝাপটা দিচ্ছে নতুন আলো। কয়েকটা বাচ্চা খেলছে। তাদের দিকে এগিয়ে গেলাম…

১৭ নভেম্বর ২০১৬

মিসিং মাই বার্থডে!

আজ দুপুরে জানতে পারলাম ৩০ আগস্ট আমার জন্মদিন না। বাসে এক লোক আমার জন্ম তারিখ জিগেশ করল। বলতেই অনেকগুলো কথা গড়গড় করে বললেন। আমার অতীতের শুভ বর্ষ কোনগুলো, আর কোনগুলো অশুভ। পরে বললেন, আমার জন্মদিন ৩০ আগস্ট হতে পারে না। আশপাশে হবে। কী জানি বাপু? উনাকে জিগেশ করলাম, আপনি নিউমোলজিস্ট না অস্টোলজিস্ট (নাকি নমিস্ট)। উনি বললেন, ফিজিওনমিস্ট (গতকাল ডক্টর স্ট্রেঞ্জ দেখছিলাম। তার ইফেক্ট কিনা কে জানে!)। উনার ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যাওয়ার অনেক কাহিনী শুনলাম। শুনলাম এ ক্ষমতার উৎস। পরে বললাম, নিজেকে নিয়ে প্রিডিকশন করতে পারেন কি-না? এ প্রশ্নে আমার প্রশংসা করে হাত তুলে ধরলেন সামনে। বললেন, দেখতে পাই কি-না তার রেখা। বললাম, হ্যাঁ। একদম চোখের সামনে ধরলে বললাম, না। উনি বললেন, ব্যাপারটা হলো এই। অন্যের সম্পর্কে বলতে পারলেও প্রকৃতি তাকে নিজের সম্পর্কে অন্ধকারে রেখেছে। অনেকটা বাল্বের উপ্রে থাকা অন্ধকারের মতো। তবে যেহেতু উনি সৎ কাজ করেন, তাই ধারণা রাখেন ভবিষ্যতে খারাপ কিছু নাই!

১৪ নভেম্বর ২০১৬

লোকজন কানে ধরতে রাজি, মালাউন হতে রাজি। সাঁওতাল হতে রাজি না। এ কালচারের গোড়া কই?

১১ নভেম্বর ২০১৬

কুমার নদী কী? নাকি নবগঙ্গা? পিতা-পুত্র যাদের নামের শেষে বিশ্বাস আছে। দুপুর আড়াইটা নাগাদ গোসল করতে আসল। পুত্র এসে প্রথমে নৌকায় উঠে পা দিয়ে পানি নিয়ে খেলতে থাকে। এরপর দুইজনে মিলে নৌকায় মাছ খুঁজতে থাকে। অনেকক্ষণ ধরে। দারাশিকো ভাইয়ের মতে, নৌকা ছেচে ফেললে এতটা সময় লাগত না! তারা হয় পরিবেশবান্ধব নয় সময়ের অভাব ছিল না। বাবা একসময় নদী থেকে উঠার জন্য ছেলেকে তাড়া দিতে থাকেন। পরে দেখা গেল নানা উসিলায় বাবাই বারবার পানিতে নামছেন। আমরা বলতে ছিলাম– সময় গড়িয়ে একসময় বাবা-ছেলে বদলে যাবে। নৌকাটাও থাকবে না। সাক্ষি ছিল অনতিদূরে মাছ ধরার খাঁচার উপ্রে বসে থাকা হাঁস!

১১ নভেম্বর ২০১৬

কেউ একজনরে হতে পারে তার অতীতের কারণে অনেকে খারাপ মানুষ বলেই সাব্যস্ত করল! এখন সমাজের ভালো মানুষগুলোর তার প্রতি কিছু প্রত্যাশা তৈরি হয়। খারাপ খারাপ প্রত্যাশা– যা তারা না করতে পারারে ভালোত্বের দোহাই দিয়া ঢেকে রাখে। যেন তারা সততই ভালো। তো, প্রত্যাশা মত যদি খারাপ মানুষটা খারাপ কাজ না করে তাদের মন খারাপ হয়!

৯ নভেম্বর ২০১৬

ছুটির দিন আসলে কাজের দিন। অনেক কাজ করলাম। সবচেয়ে পেইন ছিল হাড়ি-পাতিল ধোয়া আর ঘর ঝাড়ু দেয়া। দুটোই দেখলাম ঠিকঠাক মতো করা দারুণ একটা শিল্প। আমি যা করলাম– শিল্প হলো না। পাতিলের ভেতরে-বাইরে সব জায়গায় তৈলাক্ত হয়ে গেল। আর ঝাড়ু কোনদিক থেকে শুরু করতে হবে সেটাও জটিল বিষয়!

৬ নভেম্বর ২০১৬

সুশান্ত পালরে ক্ষমা করতে না পারার ব্যর্থতা কোথায় লুকাবেন হে মাননীয়। নাকি ক্ষমার মতো সামাজিক গুণ আমাদের জানা নাই। নিজের হাতে সমাজ ভেঙ্গে দেওয়ার আগেই তা শিখে নিন।

২৭ অক্টোবর ২০১৬

শিয়ালমারি

জায়গার নাম শিয়ালমারি। একসময় বালি চাপা দিয়া শিয়াল মারা হতো বইলা এ নাম। এখন এক বিশাল গরুর হাট। গরুর দাম এত বেশি জানা ছিল না। কিছু গরুর উচ্চতা ভীতি আছে। চোখ বেধে গাড়িতে তোলা হয়।

২৭ অক্টোবর ২০১৬

এমন এক জায়গায় আসলাম লোকজন খালি জিগেস করে- ‘ভাই, মাল ধরা পড়ছে নাকি?’

২৬ অক্টোবর ২০১৬

আচারবাজি!

টিভিতে আমের আচার বানানো শিখলাম। কাঁচা আমের জন্য অপেক্ষা করছি। আচার বানালেই হবে না, সাজানো জন্যও কাঁচা আম লাগবে। কেজিখানেক। এখন বিজ্ঞাপন বিরতি। এরপর শিখব সালাদ বানানো।

২৬ অক্টোবর ২০১৬

যার কাছ থেকে পালাতে চাই। তারে লয়ে ঘুরে বেড়াই জগতময়।

২৫ অক্টোবর ২০১৬

মন খারাপ থেকে পালাতে গেলে মন আরো বেশি খারাপ হয়। হয়ত তার সামনে মন খারাপ করে দাঁড়ায়া থাকলে ভালো।

২৫ অক্টোবর ২০১৬

সততা-অসততার বিজ্ঞাপন

ধরেন কেউ লিখল : অমুক সৎ ছিলেন। তখন সে ইনিয়ে বিনিয়ে শোক গাঁথাই লেখে। অসৎ হইতে তো সবাই পারে না- এটা চারিত্রিক নিষ্টতার ব্যাপার না সবসময়। আবার সৎ বইলা অভাবের অভিযোগও অসততার বিজ্ঞাপন মাত্র। অভাব তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চাহিদার অতিরিক্ত ব্যাপার! এর চেয়ে সততারে উদযাপনময় স্বাভাবিক একটা ব্যাপার ধরেন। ভাবুন– যা হওয়ার তাই হইছে। এরে মহিমান্বিত করতে গিয়া শোক গাঁথা লেখা অস্বাভাবিক ঘটনা আকারেই প্রকাশ করবেন ক্যান! সৎ লোকরা তো এলিয়েন বা মিউট্যান্ট নন!

২৩ অক্টোবর ২০১৬

ফিলিং ব্রেন ইন ভ্যাট

একটা এলাকার সব গলি, সব বাড়ি, সব দোকান, সব মানুষ একই রকম দেখতে। তাদের মাঝে কেউ কেউ পরিচিত। তারা কই? তাদের চেহারা কেমন?

২৩ অক্টোবর ২০১৬

থিংকিং অ্যাবাউট ন্যাড়া মাথা.

ন্যাড়া মাথা নিয়া আয়নার সামনে দাঁড়াতে ভয় লাগে। মাথার দিকে তাকালেই ইচ্ছে জাগে সব কিছু ছাইড়া দূরে কোথাও চলে যায়! কাপড় চোপড় হবে সাদা। মাথা ন্যাড়া করলে কি মাথায় দোষ দেখা দেয়? নাকি ধর্মীয় সংস্কৃতির কোনো ব্যাপার?

১৮ অক্টোবর ২০১৬

রোদ দেখে তুই করিস নে ভয়!

এমন দিনে জানালা ছাড়িয়ে দৃষ্টি ছড়িয়ে দিতে বেশ লাগে। পাখির মতো খুটে খুটে খেয়ে নেবে দূরের দৃ্শ্য। গন্তব্য না মেনে কোথাও যাওয়ার দিন এমন রোদেলা বিভ্রমে…

১৭ অক্টোবর ২০১৬

বব ডিলান বেঁচে আছেন

বব ডিলান নোবেল পাইছেন শুনে মনে করলাম ভুল শুনছি। আবার জিগেশ করে জানলাম, সত্য। তখন সত্যি সত্যি অবাক হলাম। এটা না যে উনি গীতিকার বা গায়ক ভেবে অবাক হয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিল– উনি অনেক আগে মারা গেছেন। নিউজ পড়ে বুঝলাম বেঁচে আছেন, তার বয়স ৮৫ বছর।

১৪ অক্টোবর ২০১৬

পুলিশের সাথে গেম খেললে ভগবানও তোমাকে বাঁচাতে পারবে না।

: ক্রাইম পেট্রল/সনি আট

১৪ অক্টোবর ২০১৬

জাতীয়তাবাদী দর্শক না হলে দল হারে

চট্টগ্রামের দর্শক নাকি যথেষ্ট জাতীয়তাবাদী না– এ কারণে গতকাল বাংলাদেশ হারছে। এমন কথা শুনতেছি। এটা ফান নাকি সত্যি সত্যি বলছে বুঝতেছি না। সত্যি হইলে ব্যাপারটা তত খারাপ না। আর কত জাতীয়তাবাদ দিয়া অন্যের উপ্রে থাকা! এ সব তুকতাকের দরকার নাই খেলায় জিততে।

১৩ অক্টোবর ২০১৬

ওইটা টাক! ফিলিং সরি

লোকজনের তেল চকচকে খালি মাথা দেখলে মনে হতো— এরা বুঝি হপ্তায় হপ্তায় চুল কামায়। কত যত্ম-আত্তি করে, কী সুন্দর চকচক করছে। মাথা ন্যাড়া করার পর বুঝলাম— ওইটা টাক! ফিলিং সরি।

১২ অক্টোবর ২০১৬

যে সব বন্ধু আপনার লগে সম্পর্কটারে ফানের বানায়া ফেলছে। তাদের কাছে আপনার গোপনীয়তা বা ব্যক্তিগত দুঃখ-সুখের কোনো মূল্য নাই।

১১ অক্টোবর ২০১৬

সেলিব্রেটিং আনিসুল হক!

ক্রিকেটপ্রেমীদের অনেকের ভেতর আনিসুল হক নিয়া কিছু অন্ধবিশ্বাস আছে। অথচ খেলাধুলা, গান-কবিতা মানুষরে আলোকিত করে। জঙ্গি বানায় না। ম্যাচ হারার পর যা অনেকটা ইউরোপীয় মধ্যযুগের উইচহান্টারের মতো হয়। বাংলাদেশের অন্যান্য ব্যাপার ধরলে এ ব্যাপারটাও ঠিক আছে। তারপরও কেমন যেন লাগে। একজন সবজান্তা লেখকরে নিয়া লোকে এমন করে ক্যান! অনলাইনে পুরনো ঘ্যানঘ্যানানি দেখলেও কাল মনে হয় তার ব্যতিক্রম হইছে। আনিসুল হককে অভিনন্দন।

১০ অক্টোবর ২০১৬

মন কেমন করে!

আরেকদিন- যেদিন আকাশ ছিল মেঘলা। হালকা বাতাস ছিল। থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বিষ্টি। মসজিদের বাইরে রাস্তায় বসেছিলাম। হঠাৎ মনে হল, বরিশাল জায়গাটা খুব সুন্দর। ইশ! যদি যাওয়া যাইতো! একবারই গেছিলাম বরিশাল। বিষ্টি ছিল গুড়ি গুড়ি। সে বিষ্টি মাথায় নিয়া পিরোজপুর, ঝালকাঠি গেছিলাম। আহা বরিশাল।

৭ অক্টোবর ২০১৬

ইয়াম! ইয়াম!

জুমার নামাজের পাটিতে বসে কাবসা লাহাম খাওয়ার ইচ্ছা জাগল। ইহা এক প্রকার বিরিয়ানি। কোথায় যে পাই?

৬ অক্টোবর ২০১৬

বাঙালি মুসলমান

আপা বলল, ‘আয়নাবাজি’।

তার মেয়ে বুঝল, ‘আয় নামাজি’।

৫ অক্টোবর ২০১৬

বাঙালি মুসলমানের মন

যতদূর মনে পড়ে ‘বাঙালি মুসলমানের মন’ বইলা একটা ধারণা আছে। যা অপ্রগতির, অবিজ্ঞানের। যদি কেউ বাঙালি মুসলমানের কিছু লাগে সেটা অপ্রগতির ও অবিজ্ঞান। নেতি ধারণা আকারে বিনোদনদায়ক, স্বীকারোক্তিমূলক হইলে আরো সব গেল সব গেল…

১ অক্টোবর ২০১৬

ফোক সিনেমা

একবার এক ভদ্রলোক সিনেমা নিয়া একটা লেখা চাইলেন। মিনিমাম ১০ পৃষ্টা হইতে হবে। বললাম, কী বিষয় হতে পারে? উনি ভাবিয়া বললেন, ফোক সিনেমা। আমিও বললাম, নামায়া দেবো। পরে অনেকদিন চিন্তা করে একটা মাত্র ফোক সিনেমা পাইলাম। ‘মনপুরা’। একটা সিনেমা নিয়া কী লিখব ১০ পৃষ্টা ভাবতে ভাবতে আরো কয়েকদিন চলে গেল। ওই ভদ্রলোক আর যোগাযোগ করলেন না, ফোকের হাত থেকে নিস্তার পাইলাম।

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আনন্দবাজার পত্রিকা বাংলাদেশের ওষুধশিল্প নিয়া ঘন ঘন রিপোর্ট করতেছে। ফিলিং অশনি!

২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আয়নাবাজি ও সুন্দরবন

বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রে’র আইডিয়াগুলা খুবই ক্রিয়েটিভ। যেহেতু অন্য লোকদের মাথাভর্তি গোবর। সুন্দরবন নিয়া তারা চমৎকার আবর্জনা নির্মাণ করছেন। আমাদের গলায় টাঙ্গাইয়া রাখার মতো!! যেহেতু তাদের চিমনিটা বিশ্বের সবচেয়ে উচুঁ। এনাদের মাথাও বোধহয়। এর কর্তাব্যক্তির মাথা থেকে সম্ভবত ‘আয়নাবাজি’র আইডিয়া আসছে। ট্রেলারে বেশ তকে তকে আয়না দেখা গেছে। বদলে যাচ্ছে মানুষের চেহারা! চেহারা না দেখলে চলবে ক্যান!!

২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিপদ তো বড়সড় সমস্যা! এর মধ্যে আরেক সমস্যা হলো জনে জনে ফিরিস্তি দেওয়া, নানা প্রশ্নের উত্তর দেয়া। আর লোকের পরামর্শে হ্যাঁ হ্যাঁ করা।

২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

তীরে। মেঘমালার তলে ফেইক স্বর্গ। তার ছায়ায়। হাঁটতে হাঁটতে। একদিন। মাথা খারাপ মতো অবস্থা। হয়ে যাবে। মাথা ন্যাড়া করে। তেতুল মাখব। না গজানো চুলের গোড়ায়। বলব। আহা! কী শান্তি।

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

লাভ মি অর কিল মি!

‘দেখতে দেখতে দিল খো গ্যায়া’। অনুরাধার কণ্ঠে ভজন ভালো লাগে। রোমান্স না। এত মিষ্টির লগে সামান্য টক না থাকলে রোমান্টিকতা জমে না। তো, ‘দিল খো গ্যায়া’ শুনে ভালোই লাগল। তাইলে আর দিলের মধ্যে পশু-পাখি খুঁজতে হবে না। ওমা! এবার কী বলল? ‘দিল খো গ্যায়া তো পেয়ার হো গ্যায়া’। লে হালুয়া! দিল হারায়া পেয়ার পাইলো। আর লোকে পেয়ার না পাইলে বলে দিল নাই!

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সুপারসেনসেটিভ মনোভাব ও প্রযুক্তি নির্ভর রক্ষা ব্যবস্থায় গ্যাস পাইপ, প্রেসার কুকার ইত্যাদি হয়ে যাচ্ছে বোমা। দুঃখিত ইউএস!

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিদেশিদের দেয়া সম্মাননা-ক্রেস্টের স্বর্ণ কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আগামীতে এটি ঠেকাতে সরকার স্বর্ণের বদলে রুপার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ম.জমিন

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আমার কী হবে?

স্রেফ মরে যাইতে ইচ্ছে করছে!! জাদুকাটা নদী ও টাঙ্গুয়ার হাওরের ছবি দেইখা।

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শুধুই মোল্লারাই বাউলদের প্রত্যাখান করছে, বাউলরা কি করে নাই?

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শাহ আবদুল করিমকে কলকাতার এক গায়ক প্রশ্ন করছেন, আল্লাহ বিশ্বাস করলে নামাজ পড়েন না ক্যান? তো এ র‌্যাশনাল মোল্লারে সন্তুষ্ট করার মতোই উত্তর দিলেন মহাজন— ‘আল্লাহ এত ছোট নাকি যে তিনি আকাশ থেকে দূরবীন দিয়ে দেখছেন আমি নামাজ পড়ছি কিনা! আল্লাহ অনেক বড় ব্যাপার। আল্লাহ (স্রষ্টা) অফিসের বস না।‘ তাতেই খুশিতে ডগমগ! বস না হওয়ার মধ্যে আল্লাহর মীমাংসা বড়ই মধুর। ‘অতুলনীয়’ হওয়ারে ভুলতেই বসলাম।

এ প্রশ্নের আগে আরেক কাহিনীর অবতারণা— গান করার কারণে করিমের বউয়ের দাফন করে নাই মোল্লারা। জানালেন, এটা হলো প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার আছর। এ কথা একালে বেশ সেকেলে সেকেলে লাগল গো। সোসাইটিরে একটু উল্টে পাল্টে দেখেন। যখন এক আচারি মুসলমান অন্য আচারি মুসলমানরে না মুসলমান বইলা বোমা মারতেছে। এবং যে কালে শোলাকিয়া সোয়া কাতার হচ্ছে।

১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বৃষ্টিতে রক্তে সয়লাব রাজধানী। কেউ কেউ বলছেন রক্ত নদী। এ বলাবলির মধ্যে অব্যবস্থাপনার ব্যাপারটা আড়াল আছে কেন যেন! খুব একটা শিরোনাম বা ক্যাপশনে এ ব্যাপারটা পাইবেন না। অন্তত আমি যতটা দেখছি। রক্ত নদীর বলার মধ্যে একধরনের নৃশংসতার চিত্রই পাওয়া যাচ্ছে। যা কোরবান উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরে আমরা দেখে আসছি। কিছু কল্পনাও আছে। সেটা আপাতত না বলি। ফটোশিল্প সুন্দর হইছে। আড়ালটাও।

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মানুষ বুইঝা গেছে ‘মনের পশু’ বইলা কিছু নাই। ওইটা নিয়া চিল্লাপাল্লা এখনো চোখে পড়ে নাই। তাই অনুমিত হল। মনের পশুরে ক্রস ফায়ারে দেওয়ার কিছু নাই। ক্রস ফায়ার মানেই অবিচার! এ বুঝাবুঝির জন্য ধন্যবাদ। ঈদ মুবারক!

৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ইয়াম! ইয়াম!

সকাল সকাল ভাগ্নির স্নিকার্স চুরি করলাম। চকলেটটার ভেতর নাকি প্লাস্টিক আছে। তারপরও এত মজা সুন্দরবনে! এখানেই হবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কয়লা তোমার, যন্ত্রপাতি তোমার, লোন দিবা তুমি, দরাদরি ছাড়া যন্ত্রপাতি কিনব আমি, বেশি শোধ করব আমি, সুন্দরবন ধ্বংস হবে আমার, কাজহারা হবে আমার দেশের বন নির্ভর খেটে খাওয়া মানুষ, বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনব আমি। ভাগাভাগি উপ্রে উপ্রে আধাআধি। ভেতর প্লাস্টিক।

৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ঘৃণাজীবীদের দেওয়া তালিকা মতো ‘বুদ্ধিবেশ্যা’দের নাম দেখলাম নয়া দিগন্তের সাপ্লিমেন্টে। যা দেখলাম না– পাকিস্তানী কোনো লেখকের নাম। তাদের নিয়া চালু কথার প্রেক্ষিতে– নয়া দিগন্তওলাদের কাছে পাকিস্তানিদের চেয়ে বাঙালিরা গুরুত্বপূর্ণ ক্যান হইয়া গেল ভাবতেছি।

৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

গুম, ঘুম, সুন্দরবন, কাঁধে ব্যথা

শুক্রবার রাতে টক শো শুনতেছিলাম। একজন বলতেছিলেন, গোলাম আজম ও মীর কাসেম আলী দোষ করছে তাদের সাজা হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু তাদের সন্তানরা গুম হয়ে যাবে এটা কেমন কথা। তাদের কী দোষ? একটু নড়েচড়ে বসলাম। এবার উল্টো দিকে থাকা বক্তার পালা। তিনি বললেন, অনেকদিন ধরে গুম হওয়ার কথা শুনছি। গুম হয়ে এরা কোথায় যায় সেটা তো হলি আর্টিসান, কল্যানপুরে দেখছি…। এরা একদিন হয়তো জঙ্গি হয়ে বের হবে।… এরপর চ্যানেল পাল্টাইয়া সুন্দরবনে গেলাম। আলোচক বলছেন, আমরা এখন বিমানবন্দর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে বসে কথা বলছি। বিমান উঠা-নামার শব্দ কি শুনতে পাচ্ছি? পাচ্ছি না। তাইলে ১৪ কিলোমিটার দূরে থাকা রামপাল কিভাবে সুন্দরবনে শব্দদূষণ ঘটাবে। নদীর দিয়া কয়লা সুরক্ষিতভাবে আনা হবে। পানিতে পড়ার সুযোগই থাকবে না….। তারপর শব্দ দূষণ না হওয়ার মধ্য দিয়া ঘুমাতে গেলাম। সকালে দেখি কাঁধে ব্যথা। সারাদিন তাতে ভুগলাম। মিস করলাম জ্ঞাতিজনের গজলের আয়োজন।

৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

‘মানুষ’ একটা গুরুতর ব্যাপার। ভেদাভেদ প্রশ্ন সত্য তালাশ বৈচিত্র্যতা বিলোপ করে দিতে ‘মানুষ’ ভাবতে পারাটা কম গুরুতর ব্যাপার।

১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মাসুদ রানা সিরিজ : আমি, রাশেদ ও রাজু কামাল

ভদ্রলোকের নাম রাজু কামাল। উনারে অন্যরকম কিছু মনে হতো। যদিও কখনো দেখি না। কেন?

আচ্ছা, ব্যাপারটা খুলেই বলি। তখন সেভেন পড়ি। মাত্র তিন গোয়েন্দা চিনেছি। শহর থেকে দূরে থাকায় তাও পেতাম কালভদ্রে। তখন ক্লাশমেট হয়ে আসল রাশেদ। আমাদের সে বন্ধুত্ব আজো আসে। মে বি তার অনেকটা গড়ে দিয়েছে বই বিনিময়। যা হয় আরকি! অচিরেই গল্পের বই নিয়া আসা শুরু করল। প্রথমে আনছিল তিন গোয়েন্দার ‘খেপা শয়তান’। তারপর মলাটবাঁধা কিছু বই। ওইগুলা ছিল ‘মাসুদ রানা সিরিজ’র বই। প্রতিটা বইয়ে লেখা থাকত রাজু কামালের নাম-ঠিকানা। আর সবকটি বই যত্মের সঙ্গে দোকানে বাঁধাই করা।

রাজু কামাল সম্ভবত রাশেের জ্যাঠাতো ভাই। বইগুলা উনার লাইব্রেরি থেকে লুকায়া লুকায়া আনত রাশেদ। মে বি, দুই-একটা বইয়ে লেখা ছিল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। পড়তে মজা লাগলেও কেন যেন ভক্ত হইতে পারি নাই। বরং তিন গোয়েন্দাই ছিল নেশার মতো। ২০০টার মতো কালেকশনে ছিল। কলেজে থাকতে কিছু মাসুদ রানা ভলিউম পড়ছি। পরে পিডিএফ। সে মাসুদ রানা ৫০ বছরে পা দিল। তার বয়স ৫০ নয়, সিরিজের বয়স এটা।

যা বলছিলাম— রাজু কামাল। উনারে ঠিক ঠিক সামনাসামনি থেকে দেখি নাই মনে হচ্ছে। একদিন রাস্তার অন্যপাশ থেকে দেখছি। গোবেচারা টাইপ মনে হইছে। এখন মনে হচ্ছে ভিনদেশে গিয়া মাসুদ রানা ‘গোবেচারা লুক’ নিছেন। এ ৫০ বছরে উনারে ধন্যবাদ।

মাসুদ রানার ৫০ বছর উপলক্ষে একটা লেখা লিখছি। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামীকাল পর্যন্ত। দেখা যাক প্রকাশ হয় কিনা! মাসুদ রানা সিরিজের ৫০ বছর একটা ঐতিহাসিক অর্জন। এর জন্য শুভেচ্ছা কাজী আনোয়ার হোসেনকে।

১১ মে ২০১৬

আপেল বিষয়ক হতাশা রেখে হারায়া গেলেন

পাখি আপা আমাদের আত্মীয় নন। মাঝে মাঝে আম্মাকে এটা-ওটাতে সাহায্য করতেন। সুন্দর করে লেপা রান্নাঘরে পাটিতে বসে খাইতাম আমরা– দৃশ্যটা চোখে ভাসতেছে। উনারে আমরা সবাই পছন্দ করতাম। নানা আবদার করতাম। উনার ঘরে ছিলেন সৎ মা। একটা ছন্নছাড়া অবস্থা! কোথায় কোথায় থাকেন ঠিক নাই। পরে শহরে চলে গেলেন। গার্মেন্টেসে কাজ করতে। মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় আসতেন। একদিন বললেন, আমার জন্য একটা জিনিস নিয়ে আসছেন।

তার বলার ধরন দেখে আমার চোখ চকচক করছিল হয়ত। হয়ত দেখে খুশি হইছিলেন। ব্যাগ খুলে যা দিলেন, হতাশ হলাম। একটা আপেল। তখনো জানতাম না একটা আপেল কেনাও কতটা কষ্টের ব্যাপার। উনি নিশ্চয় আমার হতাশা ধরতে পারছিলেন। অনেক পর বুঝতে পারছিলাম— খুশির ভান করার দরকার ছিল। এরই কয়েক বছর পর পাখি আপার বিয়ে হলো, বাপের বাড়িতে। বিয়ের সময় বাপ লাগে, ভাই লাগে— এটা তো স্বাভাবিক। গায়ে হলুদে বেশ মজা হইছিল। আমাদের বাসায় দাওয়াত দিয়েছিলেন আম্মা। উনি ঘোমটা দিয়া জামাইয়ের সঙ্গে খেতে বসছিলেন। এরপর অনেকদিন চট্টগ্রামে ছিলাম না। ততদিনে উনার ভিনদেশী স্বামী কিছু না বইলা চলে গেছেন। একটা ছেলে হয়েছিল। নাম সম্ভবত তারেক। দেখলাম বিয়ের আগের দুঃখ আর পরের দুঃখ আলাদা। এ দুঃখ লইলা অদ্ভুত হাসি লইয়া থাকেন। অথবা হাসির সময়ও পান না। অনেক বছর উনার লগে দেখা নাই। আপেল বিষয়ক মূল্যবান হতাশা রাইখা হারায়া গেলেন।

৯ মে ২০১৬

থিঙ্কিং অ্যাবাউট চেঞ্জ মাই ক্যারিয়ার

মা দিবস আর রবীন্দ্র জন্মদিন একাকার। ভালোই তো। দিনটা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ছিল। রাস্তার ধারে বিক্রি হচ্ছিল তরমুজ, লিচু, লুচি, হালিম। আমরা খাইলাম বাকরখানি। মনে হইতেছিল দুই দিবসের এক অর্থ– রবীন্দ্রনাথ আমাদের আম্মা!

৮ মে ২০১৬

শবে মেরাজ

শবে মেরাজ নিয়া কিছু লেখার জন্য সকাল থেকে মনটা কেমন যেন করছে। কিন্তু কোনো ভাবনাই ভাষা পাচ্ছে। শুধু একটা লাইন বলা যায়– মানব অভিজ্ঞতায় এমন রাত আর আসেনি। মানুষের মর্যাদাকে তুলে ধরার রাত।

৪ মে ২০১৬

‘জেহাদ’ শয়তানি ব্যাপার

পড়ছি জেমস জয়েসের ‘এ পোর্ট্রেট অব আর্টিস্ট অ্যাজ এ ইয়ং ম্যান’। সরল রূপান্তর করেছেন বুলবুল সরওয়ার। তো, একটা লাইন— সেটা শয়তান বা লুসিফারের পতন সম্পর্কে বলা হচ্ছে— “বশ্যতা স্বীকার করব না’- জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন তিনি।” অথ্যাৎ খোদার বিরুদ্ধে জেহাদ করছে শয়তান। সরল রূপান্তর করতে গিয়া ‘জেহাদ’র অসাধারণ মিনিং করলেন অনুবাদক। নইলে ‘জেহাদ’ খারাপ ব্যাপার হয় কেমনে!

২ মে ২০১৬

থিঙ্কিং অ্যাবাউট মায়া

সকালবেলায় দোকানে গেছিলাম। দোকানদার ড্রেসিং করা মুরগি ও কবুতর প্যাকেট করে বললেন, ‘কষ্ট পাইলেন।’ উনারে কিঞ্চিত লজ্জিত মনে হল। যা গরম পড়ছে! একটু আগাইতে দেখলাম এক বাড়ির ছায়ায় স্কুল ভ্যান দাঁড়ায়া আছে। নীল ইউনিফর্ম পরা বাচ্চারা ভ্যান চালককে অনুরোধ করছে একটু ঠাণ্ডা পানি খাইতে, তাদের বোতল থেকে। বেচারা লজ্জায় পড়ে গেলেন। না করে করে বোতলটা হাতে নিলেন।

২৬ এপ্রিল ২০১৬

আমারে উড়ায়া নিতে পারো না

মাঝে মাঝে এমন হয়। মাঝে মাঝে কেন এমন হয়? কখনো কখনো ভাবি। কখনো কখনো ভাবি না। কখনো উত্তর পাই, কখনো পাই না। হঠাৎ করে নিজের ভারমুক্ত মনে হয়। কিসের ভার? জোরে হাওয়া আসুক। এতটা হালকা হয়ে যাই! একটা বেলুনের চেয়ে, আমার দেখা সবচেয়ে হালকা জিনিস। যার পাখা নাই। তার চেয়ে…। আমি উড়ে যাবো গো। কোথায়? কখনো কখনো এ সব ভেবে চোখ বন্ধ করি। হয়ত জ্যামে আটকা পড়া গাড়িটাই আমার আবাস। গাড়িটাই! দেখতে থাকি… দেখতে থাকি… কত সুন্দর পশুর দল হেঁটে যাচ্ছে। ভালবাসাবাসি করে। অন্ধকারের ভেতরও চিত্র-বিচিত্র। দেখা যায় তারা যাচ্ছে দূরে কোথাও। দূরে যাওয়ার মওসুম এই। আমি জানালা দিয়ে উকি দিই। দেখি ঘাসের আড়ালে হারায়া যাচ্ছে। তাদের দেখতে থাকা আমি বেলুনের চেয়েও হালকা। কোনো বাতাসই আমারে উড়ায়া নিতে পারে না। পারে না।

২১ এপ্রিল ২০১৬

বৈশাখ মানে কি বলী খেলা!
.
ছোটবেলায় সে অর্থে বৈশাখ আসে নাই। ছিল বলী খেলা। হাটাহাজারির বলী, বাঁশখালীর বলী, কক্সবাজারের বলী…। আকর্ষণীয় বলী খেলা। হৈ হৈ রৈ রৈ কাণ্ড। কদাচিৎ বলা হইতে ‘বৈশাখী মেলা’। বলী খেলার সিজনটা মাথায় আসতেছে না। (বৈশাখে হয় জব্বারের বলী খেলা) এটুকু মনে আছে মাঠে ফসল থাকত না। শস্যের চিহ্ন হিসেবে নাড়া দেখা যেতো। পুরস্কার হিসেবে মেডেল থাকত। সম্ভবত টাকাও। আমরা যেতাম গজা, খাজা এসব জিনিস কেনার লোভে। জুয়া খেলাও হইত। ছোটদের ভার্সনে থাকত পানি ভর্তি জগে থাকা কাচেঁর গ্লাসে পয়সা ফেলা…।

১৪ এপ্রিল ২০১৬

বাটিতে গলছে চকবার, মাগো…

বাটিতে নিয়া গলে যাওয়া চকবার চামচ দিয়া খাচ্ছে মায়েদা। বললাম, তুই কিসে পড়স রে? বড়সড় মেয়েটা বলল, ‘ক্লাসে ফোরে।’ কী কাকতাল! জানস আমি প্রথমবার ঢাকায় গেছিলাম ক্লাস ফোরে থাকতে। তখন চট্টগ্রামে আমাদের এলাকায় দামি আইসক্রিম মানে ছিল পপি আইসক্রিম। চার টাকা দাম। দুলাভাইরে বললাম, আইমক্রিম খাবো। তিনি রাতে বাসায় সময় চকবার নিয়া আসলেন। টিভিতে না দেখলে জীবনে এ প্রথম চকবার দেখলাম। প্যাকেট ছিঁড়ে দেখি গলে গেছে। বাটিতে নিয়া খাচ্ছিলাম। কি সে টেস্টি! ওমন ডার্ক টেস্ট আর কখনো পাই নাই। পাশ থেকে ছোটবোন বলল, ‘মায়েদা প্রথম ঢাকায় গেছে ৬ মাস বয়সে। বড় বড় বিল্ডিং দেখে বলে উঠল আও!’ এই শুনে মায়েদার কি যে হাসি। ‘আচ্ছা আম্মা, এ দেখে লোকজন কী বলল!’ কি আর বলবে? আমাদের মা বইলা মায়েদার সব কিছু খেয়াল করি। অন্যের কী ঠেকা পড়ছে। আমার কাছে চকবার মানে ক্লাস ফোর, বাটিতে নিয়া খাচ্ছে মায়েদা। আমিও। মাগো… এই আমাদের গলে পড়া জীবন!

১৩ এপ্রিল ২০১৬

বিয়াঁল

গত কয়েকদিন ধরে রাত ১২টার পর একটা ঘটনা ঘটত। মিষ্টি গন্ধ পাইয়া চিল্লাইয়া উঠতাম, ‘আপা চুলার উপ্রে কিছু পুড়ে যাচ্ছে’। তখন মনে পড়ত আগেরদিনও একই কথা বলছি। আপা বলতেন, ‘চুলায় কিছু দেওয়া নাই’। আজ ব্যতিক্রম হচ্ছে। নিয়ম করে দুধ পুড়ছে না কারো বাসায়। তবে কী তারা পুড়ে যাওয়ার ভয় দুধ সেদ্ধ করা বন্ধ করে দিছে। কেমন যেন খারাপ লাগছে।… আরে না ভুলে নাই। এটা লিখতে লিখতে পোড়া দুধের গন্ধ পাচ্ছি। নিজেকে বিয়াঁল বিয়াঁল মনে হচ্ছে। এ গন্ধটার জন্যই মনে হয় অপেক্ষা করছিলাম। যাই তবে ঘুমাতে!

৬ এপ্রিল ২০১৬

হিজাব মাথা ঢাকে, মগজ নয়

হত্যা তো স্বাভাবিক ঘটনা। মোটামুটি মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। ধর্ষণও স্বাভাবিক, চুপচাপে হইলে আরকি! তাই না ঘটারই সম্ভবনাই বেশি। আবার অনেকের বিচার চাওয়া বিষয়টা হত্যায় সীমাবদ্ধ? যেহেতু অধিকারের মধ্যে পড়া বিষয় নিয়া বিচার চাওয়া বন্ধুর লগে খেলাধূলা আরকি! তাই বন্ধুরা আগাইয়াও আসছেন! ধর্ষণ করে হত্যা! তাও আবার হিজাবি নারীরে। আচ্ছা, তাইলে বলতে হয় হিজাব তোমারে বাঁচাতে পারে নাই। হুদায় চিল্লা-পাল্লা! আরে, হিজাবওলা মাথা ঢাকে, মগজ ঢাকে না। তুমি তো মাথা ঢাকতে চাও না। চোখ ঢাকতে চাও। ঢাকা থাকুক!

৫ এপ্রিল ২০১৬

দ্য অ্যালকেমিস্ট

‘দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’র বুড়ো সান্তিয়াগো মাছ ধরতে বের হয়েছিল সমুদ্রে। ৮৪তম দিনে পেয়েছিল বিশাল মার্লিন। কিন্তু ফিরে এলো শুধু কঙ্কালটা নিয়ে। আর তরুণ সান্তিয়াগো বের হয়েছে গুপ্তধনের খোঁজে। পার হয়ে গেছে একবছর। এখন আছে মরুভূমিতে প্রেমিকার সামনে, যে তার ফিরে আসাতক অপেক্ষা করবে…। দেখা যাক কী হয়!

৪ এপ্রিল ২০১৬

গুরুত্বপূর্ণ হইয়া মরা, গুরুত্বহীন হইয়া বাঁচা

‘গুরুত্বহীন ছফার সঙ্গে সন্ধ্যায়’ হাঁটে একজন। তখন আশির দশক। ওটা কবিতার নাম। বাপ ডাক শুইনা অতি গুরুত্বপূর্ণ ছফা বলে যারে জানতাম, তিনি এদিক-ওদিক তাকান। এরপর যিনি ডাব সাধেন তার পুত্রের স্বীকৃতি মেলে। শেষ ক’লাইন ‘আমি ছফাকে ধরে বলি হঠাৎ/চলো দৌড় দেই/আমাদের পরিচিত মহিলাদের মতো দেখতে/একটি সুন্দর গাভির ওলানে মুখ দিয়ে চলো/চুকচুক করে কিছু পরিষ্কার দুধ খেয়ে ফেলি’। কবিতাখান সাদ রহমানের। বইয়ের নাম ‘কাক তুমি কৃষ্ণ গো’। বাইর হলো এবারের মেলায়। এতো গুরুত্বপূর্ণ ছফা। কয়েকবছর ধরে জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে শোনা যাইতেছিল নাম। বাংলায় বিপ্লব প্রায় চলে আসতেছিল। এখন আর শোনা যায় না। অবশ্যই ওই সব জায়গায় এখন বাংলাদেশের তরে ভারত খাইতে চায়। সে না হয় অন্য কথা। এমন জল-স্থল-অন্তরীক্ষে থাকা মানেও গুরুত্বহীন হওয়া। ওমন ছফারে কাজে লাগে না। বরং গুরুত্বহীন ঘোষণা দেওয়ার মধ্য দিয়া তিনি হয়ত কোথাও জ্বলজ্বল করেন। উনার ভেতর দরদ আছিলো। তাই দৌড়; দিছিলেন কবিতার ছেলেটার সঙ্গে।

ভুল করে একবার ভাবছিলাম বইটার নাম ‘কৃষ্ণ তুমি কাক গো’! এ সব ভাবাভাবি মন্দ না।

১ এপ্রিল ২০১৬

নামাজের চৌকি

ছোটবেলা বাড়ি গেলে ছোট চৌকি দেখতাম। খাটের কিনারায় থাকত। দাদীর খাট, আমাদের খাটের পাশে ছিল। ছোট দাদা, দাদী আর চাচী আম্মার খাটের পাশেও ছিল। আরও অনেকের ঘরে দেখেছি। এখন আর দেখি না। ওইটা মূলত নামাজের চৌকি। তাতে পাতা থাকত ঘরে বানানো ছোট পাটি বা জায়নামাজ। যেহেতু আমরা বাড়ি থাকতাম না- আম্মার খাটের পাশের চৌকিটাতে নানান ধরনের জিনিস রাখতেন দাদী। দুটা জিনিসের কথা মনে পড়ছে- ডেউয়া ও আচারের বোতল। সম্ভবত এমন একটা জিনিস সম্প্রতি দেখেছিলাম। যদি ভুল না হয়। সিনেমায়। ‘সুইটহার্ট’ সিনেমায় ছোট একটা চৌকিতে প্রয়াত পারভীন সুলতানা দিতিকে নামাজ পড়তে দেখেছি।

২৪ মার্চ ২০১৬

বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া

বৃষ্টি হচ্ছে। সাথে ঝড়ো হওয়া। এমনই মনে হয়। কাছে অথবা দূরে। হয়ত আমার ভেতরে। কান খাড়া করে ধরতে পারি পাশের ঘরে ফ্যান চলছে। এই তো! তাইলে বিভ্রম। হয়তো। তবে বৃষ্টি কেন? অন্য কিছুও হতে পারত। হয়ত বৃষ্টির শব্দ এমন বলেই! অথবা এমনটাই চাই।… বৃষ্টি। আর ঝড়ো হওয়া।

১৬ মার্চ ২০১৬

ব্যক্তিগত নৈঃশব্দ্য তুষারের চেয়ে ক্ষণস্থায়ী

বইটা যখন পড়া শুরু করলাম। সবে তুষার ঝরতে শুরু করল। অবাক করা সৌন্দর্য চারদিকে। একলা থাকা মানুষের জন্য বিশ্রাম বটে। আশার কথাও। আরও গভীরে যাইতে যাইতে বোঝা গেল এর বাইরে যাইতে চায় মানুষ। তার সুখ লাগে। সেখানে নৈঃশব্দ্য অনেকটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। সুখের জন্য যতই আগাতেই থাকি নৈঃশব্দের আমি অনেকটা হারায়া যায়। সামষ্টিকতার ভেতর পারফর্ম করা আর ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার দ্বন্দ্বে মানুষ যখন এই নৈঃশব্দ্যকে দোলাচালে রূপান্তর করে, সে ধীরে ধীরে হারাতে থাকে। যদি না তার সক্রিয়তা থাকে বর্তমানে, যদি না কোনো রূপান্তরের প্রশ্ন তুলে…। যেমন ব্যক্তিগত আল্লাহ বইলা কিছু নাই। একসময় আরও বেশি একা হয়ে যায়। বইটা প্রথমদিকে এক মহত্তর অভিযাত্রায় নিয়ে যাচ্ছিল মনে হয়, ধীরে ধীরে হারায়া গেল বিবর্ণতায়। বলছিলাম ওরহান পামুকের ‘কার’ নিয়ে। যার বাংলা অনুবাদের নাম ‘তুষার’। আরও কিছু বিষয় আছে… ‘হিজাব’ যে আত্মমর্যাদা ও ধর্ম পালনের সঙ্গে কতটা জড়িয়ে আছে, লড়াইয়ের প্রতীক হিসেবে এর মূল্য আগে এতোটা অনুভব করি নাই।… পাশ্চাত্যের ব্যক্তির ধারণা প্রাচ্যে কেমনে অচল… অথবা কোনো নির্বাসনই সংকটকে আড়াল করে না। আর কবিতা কিভাবে দিব্য হয়ে উঠে তাও আছে। অনুবাদক প্রবীর চ্যাটার্জী। প্রকাশক সন্দেশ।

১২ মার্চ ২০১৬

আলহামদুলিল্লাহ

আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কী? এটা নিশ্চয় ভাষার বিষয় না। তারপরও জিহ্বার ডগায় কেমন কেমন করে!! মনে পড়ে সে দিনটার কথা। একদিন বিকেলে হাঁটতেছিলাম। একা একা। একটা পাতা হয়তো ঝরে পড়বে। আমরা এমন কল্পনায় সে হয়তো ঝরে পড়ে। আমি দেখছি কি-না মনে পড়ে না। বললাম, আলহামদুলিল্লাহ। ওই অনুভূতি আর কখনো হয় নাই। ভাবনাটা পবিত্র করে দেয়। কিন্তু ব্যাখ্যা করতে পারি না। এ এক অন্তর্নিহিত সঙ্গতির ভেতর সমর্পণ। এর থেকে দূরে থাকার সহজ ব্যাপার হলো— যুগে যুগে ধর্ম নিয়া কে কী করছে তা ভাবা! তারপর সিদ্ধান্তে আসা— ধর্ম ঠিক হলে এমন হওয়ার কথা না। আল্লাহ এক হলে এমন হওয়ার কথা না! যেহেতু ঠিক-বেঠিকের লজিক আপনারই, ধর্ম আপনার আলোতেই ঠিক হবে। এমন হইলে আমি হয়তো কখনো আলহামদুলিল্লাহ বলতে পারব না!!!!

১১ মার্চ ২০১৬

হরি বা বস্তুর লগে বিশ্বাস ও তর্ক

কলকাতার বইয়ে ছিল ‘বিশ্বাসে মিলায় হরি, তর্কে বহুদূর’। বাংলাদেশে ছাপা বইয়ে ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর’। এগুলা আমাদের ক্লাশের বই ছিল। হরি আর বস্তু এক জিনিস কি-না জানি না। মূল বিষয় হলো তর্ক দিয়াই দর্শন নিজেরে ফারাক করে ধর্ম বা নির্বিচার (!) কিছু থেকে। কথা হলো বিশ্বাস ছাড়া কি তর্ক চলে? না তর্ক ছাড়া বিশ্বাস চলে?

একজন লোক কোনো কিছুরে বিশ্বাস করছেন দাবি করলে, আর কিছু না হোক নিজের লগে তর্ক করে। তর্কের পদ্ধতি নিয়া কথা বলা যায়, কিন্তু তর্ক না এটা বলা যায় না। আবার যিনি তর্ক করেন— আর কিছু না-ই হোক তর্কে তো বিশ্বাস লাগে। তা যদি না হয় তর্ক করা হুদা কাম। আর তর্ক যদি করেন কোনো ফলাফলের জন্যই তো করেন। ফলাফল মানে আপনারে কিছুরে বিশ্বাস করা লাগে। যদি ফলাফলে অবিশ্বাস থাকে তাইলে আপনি তর্কে ‘ফলাফলে অবিশ্বাসরে’ বিশ্বাস করেন। হরি ধর্মীয় শব্দ। ওটা বাদ দিয়া বলি— এরে কি বস্তু বলা যায়!

৯ মার্চ ২০১৬

অনিশ্চিত দেখাদেখি

ঘুম থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যা হয়ে এলো। সব আলো মরে গেছে, কোথাও ঝুলে আছে নৈঃশব্দ্য। তাই আমিও চুপচাপ। অনেকক্ষণ পর বারান্দায় বাইর হয়ে আকাশের দিকে তাকায়া দেখি— আলো মরে নাই। তামাটে মেঘ দিন শেষের সৌন্দর্য ঢেকে রেখেছে। বৃষ্টি আসবে হয়তো। সময় নিয়ে চোখের ভ্রান্তিতে অস্বস্তি জাগে। দেখা মাত্রই নিশ্চিত হওয়ার বস্তু নয়! আমি সন্ধ্যার অপেক্ষা করি। আজ কোনো তারা দেখা যাবে না…।

৬ মার্চ ২০১৬

সে চোখ আমার নাই

নিখুঁত ভঙ্গিতে ডানা ঝাপটিয়ে তারা আসে। ডানার আঘাতে বাতাস নিখুঁত গতি পায়। মেঘও জমে সেই মতো। পাখিরা আসে সুমিষ্ট হৃদের দেশ থেকে। যেখানে অহর্নিশ স্বর্গীয় হওয়া খেলে। প্রজাপতির ডানায় জমে থাকা রঙ ক্রমশ মেঘ হতে থাকে। তবুও তারা সেই দেশ ছেড়ে আসে। তাদের দিকে তাকায়া মনে হয়, নিখুঁত কিছু কারো সন্তুষ্টির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এমন ভাব আমার মাঝে করুণার ঝড় তোলে। পাখিদের সাথে কথা বলি। একটি পাখি বলে, ‘ব্যাপারটা এতো আপতিক নয়। আত্মার শুদ্ধতার কথা ভাবো। তা শুধু ছড়ায়া দেওয়ার। নিখুঁত হওয়া চোখের সৌন্দর্য মাত্র, কিন্তু চোখ তারে পায় না! যদি পায়, তাও ছড়ায়া পড়ে আমাদের ডানায় ভর করে।’ আত্মার কথা বাদ দিয়ে ভাবি— হায়! সে চোখ আমার নাই।

৫ মার্চ ২০১৬

দেখা হয় না

আয়নায় থির হয়ে থাকে সময়। বর্তমান দেখি না। অতীত আর বর্তমান। স্বচ্ছ জলের তলে বহমান ছোট মাছ, কাঁকড়া ও তাদের খাবার। স্বচ্ছ জলের তলে ডুব দেয়া পানার শেকড়। পাড়ে নড়তে থাকা দীর্ঘ গাছের ছায়া। ছায়া ছায়া মেঘ আর আকাশ। আর কিছু ছবি নিজের মতো ভেসে চলে। যেমন থাকার কথা আয়নায়। তেমন! অতীত আর বর্তমান। আমি একটা প্রতিবিম্ব খুঁজছিলাম। নিজের। দাঁড়ায়া আছি তা-ই দেখতে। আয়নার কৃপণতায় আমার বয়স বাড়ে, নিজের সুরত দেখা হয় না।

৪ মার্চ ২০১৬

আধা আস্তিক, আধা নাস্তিক

তাদের একজন আস্তিক, আরেকজন নাস্তিক! ছয়মাস একলগে থাকলেন। তাদের উদ্দেশ্যও একই— নিজের মন্ত্রে অপরকে দীক্ষিত করা। তো, ফলাফলও একই। ছয়মাস পর আস্তিকের প্রশ্ন ‘আসলেই কি আল্লাহ আছেন?’ আর নাস্তিকের প্রশ্ন ‘আসলেই কী আল্লাহ নাই?’ ঘটনা সত্য! তবে এদের মতো বিচার করলে আধা সত্য!

৩ মার্চ ২০১৬

শোন গো দখিনা হাওয়া

এ লাইনের পরের কথাগুলো কী? সম্ভবত, ‘প্রেম করেছি আমি…’! না-কি প্রেমে পড়েছি। কয়েকবার মনে করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মনে আসে নাই। একবার শুনে নিলেই তো হয়। সমস্যা হলো অনিচ্ছুকভাবে গান শুনতে আমি অভ্যস্ত নই। এ গানটা পছন্দ তা না, হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে মাথায় আসছিল আরকি! আবার যখন পছন্দের কোনো গান শুনি মনোযোগ থাকে না। কিছুদিন আগে একটা গান ১০বারের মতো শুনেছিলাম। সেইবার গানটির একটা বিশেষ অংশ শোনার চেষ্টা করছিলাম। গায়কের স্বরের উঠানামা আমাকে বেশ বিস্মিত করেছিল কোনো একবার। তাই ওই অংশটা শুনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বারবার বাজানোর পরও বুঝতে পারি নাই কখন লাইনটা চলে গেছে। …ঠিক ওই সময়টাই চিন্তা কোথায় হারায়া যায়। এটাও বোঝা যায় না কী চিন্তা করছিলাম। না-কি গানের মধ্যে হারায়া যাই, বা সেখানে এমন নৈঃশব্দ্য থাক হারায়া যাওয়ার মতো যেখানে গান বলে কিছু থাকে না।

৩ মার্চ ২০১৬

কিছু কথা আছে

কিছু কথা আছে। যা বলতে চাই। তা বলতে গলায় স্বর ফোটে না। চোখে কিছু খেলে না। না, হাতও নড়েচড়ে না। ওহ! এতো নিছক সময় ও স্থানের কথা বলছি। বিষয়টা তো এমন নয়। তাহলে কী মনে মনে! না, মন বিষয়ে নিশ্চিত নই। তারপরও কথাগুলো বলার আছে। এমন যে তা সবসময় বলা হয়ে থাকে, বা বলে থাকি। শীতের রাতের মতো। যখন নক্ষত্ররা পরিষ্কার দেখা যায়, মনে হয় এ দেখাদেখি কখনো ফুরোবে না। ছি! কী লজ্জা। নক্ষত্র, শীতকাল, রাত— সবই তো স্থান-সময়ের হের ফের। ধরো, কোনো একদিন কথাগুলো বলা হলো। তখন কি গলা, চোখ, মুখ, হাত কিছুই থাকবে না? মন বলেও কিছু! এই যা! মনে নিশ্চিত নই। ভাবতে পারব মনে বলে কিচ্ছু নাই! তাহলে ওই জায়গাটা কোথায়! এই দেখো আবার চিন্তা গুলিয়ে যাচ্ছে।

২ মার্চ ২০১৬

দারুণ ঘুম পাচ্ছে

সে বলল, দারুণ ঘুম পাচ্ছে। মনে হচ্ছে কতদিন ঘুমায় নাই।… এই বলে মাথাটা শরীর থেকে আলাদা করে মনিটরের পাশে রাখে। তার চোখ দুটি মুঁদে আসে নিদে। আর হাত দুটি একনাগাড়ে লিখে চলেছে। আমারও ইচ্ছে করছে খানিকক্ষণ ঘুমায়া নিই। ঘাড়ের কাছে হাত দিয়ে দেখি কবজা জমে গেছে। আশপাশে পিয়নকে খুঁজছিলাম। সরিষার তেল পাওয়া যায় কি-না! প্রায়ই তিনি আমাদের মুড়ি মাখিয়ে খেতে দেন। কিন্তু তাকে পাওয়া গেল না। দরকারি কোনো সদাইয়ের জন্য হয়তো বাইরে গেছেন। আমিও বাইর হই। ডাক পিয়নের খোঁজে। কাউকে চিঠি লেখে যদি ঘুম আনা যায়।

১ মার্চ, ২০১৬

রিচির দরবারে

২০১৪ সালের মে’র প্রথমদিনে গিয়েছিলাম হবিগঞ্জ। আমি ও কামাল। উকিল মুন্সীর পীরের খোঁজে। রিচির সাহেব বাড়িতে। বর্তমান পীর সাহেবের সাক্ষাতের অপেক্ষা করছিলাম। পুকুর ঘাটে। এ অবসরে বাড়ির কয়েকজন লোকের সঙ্গে দেখা হলো। খুব বেশি তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। আমার জানা তথ্যগুলোই তারা বলছিলেন। এর মধ্যে একজন বললেন, একটা জিনিস আপনাকে দেখাচ্ছি। এই বলে একটা ছবি আনার কথা বললেন আরেকজনকে। আমি ভাবছিলাম উকিল মুন্সীর ছবি। বাহ! উকিল মুন্সীর ছবি দিতে পারি নাই— এ উসিলা দিয়া আমার প্রথম লেখাটা একজন ছাপে নাই। যাই হোক, ছবিটা আসার আবেগ লুকালাম অনেক কষ্ট। তারপরও মুখে চলে এলো, ‘এ তো আমার লেখা!’ যুগান্তরে ছাপা হয়েছিল ‘উকিল মুন্সীর গানের ভেতর বাড়ি’ নামে লেখা। সে লেখা বাঁধাই করে রাখা আছে রিচির দরবারে।

২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আমার কর্ণফুলী। হরিশংকর জলদাস। প্রকাশক বাতিঘর

উনার দুটা উপন্যাস পড়ছিলাম। কসবি ও মোহনা। ‘কসবি’ আমার মনে তেমন কোনো ব্যঞ্জনা তৈরি করে নাই। বেদনা জাগায়া পরে নিছক গল্প হয়ে যায়, যার মাধ্যমে অনেক কিছু জানা গেল। শেষটা কেমন যেন এনজিও প্রজেক্টে হারায়া গেল। ‘মোহনা’র বর্ণনাভঙ্গি মনোহর। মুগ্ধ হওয়ার মতো। শেষটাই আইসা মুগ্ধ হইতে পারি নাই। কেমন যেন তাড়াহুড়া। ‘মোহনা’ নামক নারীকে তিনি যে আসন দিয়েছিলেন, তা কেন দিয়েছিলেন বুঝি নাই। মনে হলো টুইস্ট সর্বস্ব কিছু করতে চেয়েছেন। যাই হোক, ‘আমার কর্ণফুলী’ হরিশংকের আত্মজীবনীমূলক রচনা। ক্ষীণকায় বই। পড়তে ভালো লাগে। কাজের ফাঁকেই পড়া যায়। লেখককেও ভালো লাগে, পরিচিত মনে হয়। বৃহৎ স্বপ্নহীন আমাদের এ জীবন ভালো থাকুক।

২৯ ফেব্রুয়ারি

এমন গল্প আছে বলে…

আমার মাথায় একটা গল্প আছে। হাঁটতে যাবার গল্প। দূরে বা কাছে। অথবা সান্ধ্য ভ্রমণের নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। গল্পটার শুরু এমন… ‘কোনো একদিন আমি হাঁটলে বেরুলাম’। আর আমি মনে মনে ভাবছি, ধরো একদিন আমি হাঁটতে বেরুলাম, তারপর কী কী যেন ঘটল…। তা হলে কী দাঁড়াচ্ছে আমি হাঁটছি, তা আর বাস্তব থাকে না। প্রতিদিন যা যা করি তা তা গল্প হয়ে উঠছে না। কী বললে! ‘কোনো গল্পে আমায় ভেবে না। আমি গল্পের খোরাক হয়ে অন্যের মাথায় প্রকাশ হতে চাই না’। তুমি তা ভাবতে পারো। যেমন আমি ভেবে যায় তোমায়। না-কি তুমি ভাবো না! এমন গল্প আছেই না বলে তুমি আছো…।

ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬

তাই আমি চলে যাই…

কয়েকটা বছর তো গেল! দশ বা বিশ। অথবা আরও বেশি। এখানটায় আমরা ঘুড়ি উড়াতাম। একটা পুকুর ছিল। না ডোবা। কাউকে গোসল করতে দেখি নাই তো। ওহ! একদিন পুকুরটাই পা হড়কে পড়ি। তারপর ভেসে উঠি। আমার গায়ে নাচছিল মাছেদের ছানা। রঙিন। পুকুরটা কই? ডুবেছে। ওইখানে একটা খেজুর গাছ। যার তলে একদিন বসে। না না অনেকদিন ঘুড়ি উড়িয়েছি। মাটি খুঁড়লে হয়ত। মিলতে পারে। তার শেকড় আর মাছেদের কঙ্কাল। শেকড় বহুদূর যায়। গেলে তুমি পাবে জল। পুকুরে জল থাকে যেমন। মাটিতেও। একদিন। না না অনেকদিন আকাশ হতে চেয়েছিলাম। না-কি উড়তে! ঘুড়ি হয়ে। হয়েছি তো। যোজন যোজন পথ পাড়ি দিয়ে নইলে ফিরে আসি কেমনে। শুধু পুকুরটা নেই। ছোট ছোট মাছের দল। খেজুর গাছটা। আর কী নেই..? দিগন্ত! যেখান থেকে আমি এসেছি। তাই আমি চলে যাই…।

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬

জারুলের বনে তারাও হয়ত অপেক্ষা করত। তোমার।

অসীমে কোনো এক মাঝ রাত্তি। জারুল বনে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমরা। দোকান-পাঠ গোছানো হচ্ছে। সকালে দোকানি আবারও জাগবে। আমরা আসার আগে।

দৃশ্যটা আমাদের কাছে বাস্তব ছিল না। হয়ত তাদেরও। এতো রাতে এ বনে কোনো পথিক আসে না। আমরা বিভ্রান্তি এড়িয়ে যার যার ঘরে ঘুমাতে গেলাম। আমি ভুলে গেছিলাম সেদিন তোমার কোনো ঘর ছিল না।

আমি হয়তো ভাবছিলাম অন্য কোনো দিনের কথা। হয়তো কোনো গল্প বুনতে বুনতে— তোমাকে শোনাবো বলে। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। শেষ রাতে, যখন রাত শেষ হয়ে আসে বলে ভ্রম হয়। আমি জেগে উঠি। বারান্দায়। চড়ুইয়ের দল যেখানটায় আসে। তাদের খুঁজতে থাকি। হাত ভর্তি ভাজা ছোলা। কেউ তো আসে না। অনতিদূরে যে পাহাড়— তার সবুজটা হাতড়াই। তারও কিছু দূরে কেউ বসে আছে। যার আজ ঘর নেই।

….কখন যেন ঘর হারিয়ে বের হয়ে পড়ি। তোমায় খুঁজতে। তোমার দেখা পাই না। কোনো কোনো দিন জারুলের বনে দোকানিদের দেখি। দৃশ্যগুলো খুবই সত্যি মনে হয়। তারা দোকানের ঝাপ ফেলে, আমি সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করি, ফিরে আসবে বলে! তারা হয়তো জানে না… আমি জেগে আছি। তবে। তারাও হয়তো অপেক্ষা করত। আমার সাথে। তোমার।

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৬

আমি একদিন বাঙালি, আপনার সিনেমা প্রতিদিন বাঙালি হোক

২১ ফেব্রুয়ারিতে ‘শোবিজ টুনাইট’ নামের অনুষ্ঠান দেখতেছিলাম। ওইখানকার ভাষা দিবসের বিশেষ প্রতিবেদন এমন, বাংলাদেশি সিনেমায় বিদেশি ভাষার নাম ক্যান! এটা খারাপ ব্যাপার। তাদের ধারণা সিনেমা নকল বলে নামও নকল! মানে, এই অনুষ্ঠানগুলা যারা বানান, তারা যেভাবে কথা-বার্তা আদব লেহাজ নকল করেন আরকি! তাইলে, বাংলা সিনেমার নাম শুধু বাংলায় হতে হবে। ক্যান? তার উত্তর–নির্দিষ্ট সিজনে ঢাকনা ছাড়াইয়া ফেনা উঠা চেতনা ছাড়া কিছু না। এ ব্যাপার কি শুধু সিনেমার ক্ষেত্রে, জীবনের অন্য ক্ষেত্রে নাই! এই যে ভদ্রমহিলা উপস্থাপিকা— তিনিও একদিনের জন্য বাঙালি সাজ নিলেন। প্রতিদিন উনাকে পশ্চিমা আউটফিট ও উচ্চারণে (কালও) দেখি—একদিনের জন্য বেমালুম শাড়ি-মালা পইরা অসাম অবস্থা। এর কোনটারে আমি আপত্তি জানাইতেছি না। এমনও বাসনা থাকতে পারে বাঙালিদের মধ্যে একমাত্র আপনারই বিদেশি হবেন– আপামর জনতা না! কিন্তু আপনারা একদিন বাঙালিয়ানা দেখাইবেন আর বাংলা সিনেমারে সারাবছর বাংলা নাম নিয়ে হালচাষ করতে হবে— এটা কেমন ব্যাপার! ভাইবা দেখেন, আমাদের ‘আবহমান বাঙালি’ ব্যাপারকে বেশি আহত ধরে ওইসব পোশাক, কথাবার্তা… আর যা যা। তবে আবার সমস্যা আরও ছোট! ভাবতেছি ‘জিরো ডিগ্রি’ সিনেমার বাঙালি নাম কী হতে পারে? এ সিনেমার পোস্টার প্রতিবেদনে কয়েকবার দেখলাম।

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫

ডিম সিদ্ধ, ইলিশের কাঁটা ও আম্মা

ডিমটা সিদ্ধ করে বসে থাকতে পারলাম না। পরোটা নিয়া ঝাঁপাইয়া পড়লাম। চুলোয় গরম করতে দিলাম ইলিশ মাছ। ডিম শেষ, এবার ইলিশের জন্য অপেক্ষা। খাওয়া থামাইয়া মাঝপথে বসে থাকা কি যে বিরক্তকর! টিভিতে দেখছিলাম ‘ম্যাড ম্যাক্স ফিউরি রোড’। একটা কাঁটাওলা গাড়ির মারপিঠ দেখতে দেখতে ইলিশ প্রস্তুত। বেশ চেটেপুটে খাচ্ছিলাম। এর মাঝে বুঝতে পারলাম গলায় কাঁটা আটকেছে। তা নিয়া খাওয়া শেষ করলাম। পানি-টানি খাইলাম। কাজ হলো না।

অস্বস্তি নিয়া ঘুমাইতে গেলাম। আম্মার কথা মনে পড়ল। কাঁটা সারানোর জন্য অনেক মানুষ তার কাছে কলা নিয়ে আসতেন। উনি একটা দোয়া পড়ে দিতেন। বেশ সুনাম আরকি! এখনও আছে। হাদিয়া হিসেবে দুই-এক টাকা মসজিদে দিলেই চলে। এখানে আম্মাকে কোথায় পাবো! তিনটার দিকে ঘুম ভেঙে গেল। মনে হলো কাঁটা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। আমায় জাগানোর কী দরকার ছিল! খুবই সচেতন প্রক্রিয়া। আর ঘুম এলো না।

বাবা দুইটা জিনিসরে খুব ভয় পান। কাল আমার সঙ্গে দুটোই ছিল। কাঁটা ও মশা। মশারির মধ্যেও ভনভন করছিল!

আর আম্মার পছন্দ… ইলিশ মাছ ও ওয়াহিদ সুজন। বাবারও নিশ্চয়!

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫

Comments

comments