সুপারহিরো মানুষরে বাঁচাবে না

সুপারম্যান, থানোস, ওয়ান্ডার ওম্যান ও ক্যাপ্টেন আমেরিকা

এক.

সুপারম্যান মইরা যাওয়ার পরদিন পত্রিকার হেডলাইন ‘world without hope’. সে সিনেমার নাম ‘জাস্টিস লিগ’। যদি সুপারম্যান না থাকে এটা মনে ঠিক আছে মনে হয়। বাট, আসরে এটা ঠিক না। মসিহাজনিত বিভ্রম মানুষরে অনেক সময় নিজের ক্ষমতা টের পাইতে দেয় না।

সুপারম্যান যতটা না (অন্যের) জাস্টিসের জন্য লড়ে তার চেয়ে বেশি নিজের অস্তিত্বের জন্য লড়ে! তার কপাল এমন কাণ্ডের লগে বাঁধা। যেহেতু জন্ম থেকেই এরা সুপারভিলেন আর ব্যর্থ নিয়তি নিয়া ঘুরে।

ডিসি কমিকস বলতেছে ‘অল ইন ওয়ান’। তাই সুপারম্যানকে সবসময় ‘হোপ’ হিসেবে দেখানো হয়। ব্যাটম্যানের সঙ্গে লড়াইয়ের পর্বে প্রথম তারে লোকে ‘গড’ বানাইলো, পরে আবার ‘ইভিল’। আবার সেক্রিফাইসও হলো না মানবতার তরে। মইরাও উপকার করতে পারল না।

আহারে ব্যাটম্যানও তারে বুঝতে পারলো না! ট্র্যাজেডির লগে হোপের দোস্তি আছে মনে হয়। বাট এই রিস্কি সুপারহিরো কেমনে নেবে। সে তো যীশু না। নকল যীশু। যীশু তো একজনই।

দুই.

মানুষের ত্যাগই মানুষরে বাঁচায়, নাকি!

যুদ্ধের দেবতা এরেসরে খতম করল ওয়ান্ডার ওম্যান/ডায়ানা, যিনি জিউসের কন্যা। এটা কইরা সাফ সাফ ম্যানকাইন্ডরে বাঁচানো গেল না। জান দিতে হইলো স্টিভ ট্রেভররে। মানে মানুষ নিজেরে কোরবানি দিয়া অপররে বাঁচায়।

তাইলে ব্যাপারটা এই দাঁড়ালো কি দেবতারা মূলত তাদের যুদ্ধরে পৃথিবী পর্যন্ত টাইনা আনে- তার যতটুকু মানুষের ঘাড়ের উপ্রে পড়ে, তার মুসাবিদা মানুষরেই করতে হয়। দেবতাদের নিজের লড়াইয়ে এর সমাধান হয় না। জাস্ট নিজেদের মধ্যে চোর-পুলিশ খেলা।

মানুষের ভালো-মন্দের নানান ফেরকা আছে। নইলে ম্যানকাইন্ডের মন্দ-ভালো পাহারা দেওয়ার জন্য ডায়ানারে প্যারিসে থাকতে হয় ক্যান? যুদ্ধ দেবতার মরার লগে সকল অশান্তিও শেষ হয়া যায় না। হ্যাঁ, অশান্তি তো নানা কিসেমের বটে।

ডায়ানারূপী গল গাডটের প্রথম সিনেমা ‘ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান’-এ তো সমস্যা অন্যরকম ছিল। তাইলে মানুষ ক্যান ভাবে এ বিপদই শেষ বিপদ। ডেমিগড ডায়ানাও তাই ভাবছিল। পরে বুঝতে পারলো ভুল।

এখানে মনে হয় খ্রিস্টানগো (সিনেমার সময়কাল/স্থান ধরে) খোদার কাছে অলিম্পাসের পরাজয়। অলিম্পাসের গড অর্তিবর্তী না, সর্বদর্শীও না। যেহেতু মানুষ ব্যাপারটা প্রায়শ আন্তরিকভাবে বুঝতে পারে না, তাই পাহারায় থাকা জিউস কন্যারে গুরুত্বপূর্ণ ভেবে নেয়। এটা খুবই নির্মম ব্যাপার মানুষের জন্য।

তিন.

‘অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার’-এর গল্প ওই সিরিজের সবচেয়ে সিরিয়াস ব্যাপারই তো। বাট সিনেমাটা বেশ ফানি মনে হলো।

ইভেন, ভিলেন থানোস পালক মেয়েকে বিসর্জন দিয়া যতটা কাতর সুপারহিরোদের ততটা মনে হয় নাই। টিনএজ সুপারহিরো স্পাইডার-ম্যানের মরতে না চাওয়াটাও ততটা ইমোশনাল করে না। এর মাঝে দুই-একটা ফানি কমেন্টও আছে, দর্শক হাসানোর জন্য। যেমন; বিটলসের মতো অ্যাভেঞ্জার্স টিমও ভাইঙা গেছে এইরকম কিছু।

বাট, একমাত্র প্রায় অভিব্যক্তিহীন থানোস ছাড়া কেউ ছুঁয়ে যায় নাই। সিনেমাটিক ইউনিভার্সে সব কল্পনারে ছাড়ায়া গিয়েও ভেতরকার লজিক হিসেবে বাস্তবসম্মত হয় নাই। আর পুনর্জীবনের ব্যাপারটা তো আমরা ‘জাস্টিস লিগ’-এ বেশ পচাভাবে দেখছি। ‘এন্ড গেম’ কী দেখাবে কী জানি।

অথচ দেখেন ‘সিভিল ওয়ার’-এর যখন সুপারহিরোরা দুই ভাগ হয়ে যায়- ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস ও টাচি ছিল। এর কারণ হইতে পারে প্রেক্ষাপটটা সমসাময়িক দুনিয়ার আর সুপারহিরোর সঙ্গে আমাদের যে ধরনের পরিচয় তার বেশি কল্পনা সেখানে ছিল না। এবং গল্পে দুনিয়ার মানুষের হিস্যা ও অধিকারবোধ পরিষ্কার ছিলো।

এখন! ‘এন্ড গেম’-এর ট্রেলারে গল্পের চেয়ে মিউজিক ভালো লাগছে বেশি। দেখা যাক কাহিনি কী বলে! এপ্রিলেই তো আসছে।

Comments

comments

Comments are closed.