সন্ধ্যা নামে তিস্তায়

ভ্রমণটা ছিল বেশ লম্বা। গাইবান্ধা হয়ে কুড়িগ্রাম, সেখান থেকে লালমনিরহাট ঘুরে নীলফামারী। এরপর ঢাকায় ফিরব। যাত্রার কয়েক দিন আগে অফিসের ক্যান্টিনে খেতে বসেছি, কথা উঠল ভ্রমণ নিয়ে। পাশ থেকে একজন বললেন, ‘গাইবান্ধা গেলে বালাসী ঘাটের রেল ফেরি দেখে আইসেন।’ এমন ধারার ফেরির কথা আগে শুনি নাই। আবার গাইবান্ধা পৌঁছতে পৌঁছতে ভুলেও গেলাম।

গৌড়ে সবই বর্তমান

তিনজন ভদ্রলোক এগিয়ে আসছেন। দুজনের গায়ে পুলওভার, একজনের গায়ে চাদর। মার্চের শেষ দিনে তারা শীতের দেশে যাচ্ছেন বোধহয়। আর আমার গায়ে টিশার্ট, সহযাত্রীর গায়ে ফিনফিনে শার্ট। যদিও বিকালে শিলাবৃষ্টি হয়েছে, তাই বলে এত প্রস্তুতি? এসব যখন ভাবছি— সেই তিনজন আমাদের বাসে উঠলেন। সামনে ৮-১০ ঘণ্টার জার্নি। চিন্তার বিষয়। কী বলেন? এক. বাসে তেমন ঠাণ্ডা লাগেনি।…

জয়েনশাহী, হোমরিক ও নৈঃশব্দ্যের গান

এক. এনজিওর নাম ‘জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ’। মধুপুর বন দেখতে গিয়ে উঠেছিলাম ওখানে। নাম থেকে বোঝা যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটি আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করে, আর ‘জয়েনশাহী’ শুনতে একটু অদ্ভুতই লাগল। এলাকার নাম তো নয়ই, আদিবাসী কোনো শব্দও মনে হলো না। ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে জয়েনশাহীর হদিস পাওয়া গেল। টাঙ্গাইলের সীমানাঘেঁষে ময়মনসিংহে রয়েছে হযরত জয়েনশাহীর মাজার। খুদে সাইনবোর্ড থেকে জানা…

বন পেরিয়ে সমুদ্র

এক. পিচ্চিটার বয়স কত হবে? বলেছিল বটে, ভুলে গেছি। ১০ অথবা ১২। নাম হতে পারে শাকিল বা এমন কিছু। আমরা খালের পারে দাঁড়িয়ে ছিলাম। যদিও বলা হচ্ছিল নদী। আমি এর চেয়ে শীর্ণ নদী দেখেছি ঢের। তখনই তার সাথে কথা-বার্তা। যে দেশের যেমন ভাব! এর ঘণ্টাখানেক আগে বলেশ্বর ও বিষখালীর যে ব্যাপ্তি দেখছিলাম তার তুলনায় এটা…

মৈনটের বিকেলে ভীষণ এক রাত্রির হামাগুড়ি

এক. চাইলেই মৈনট ভ্রমণের তারিখটা বের করতে পারি। আগের রাতটি মোটামুটি নিখুঁতভাবে মনে আছে। কয়েকবার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল গোলাগুলির শব্দে। অনেকটা সময় নির্ঘুম ছিলাম। অনেক বছরের মধ্যে এই প্রথম আমাদের খাওয়ার ঘরের বাতি নেভানো ছিল। আমাদের কয়েকবার বাড়ি পরেই হানা গিয়েছিল পুলিশ। ‘জঙ্গি’ আস্তানায়। আমরা তেমন প্রমাণাদি পত্রিকা ও অন্যান্য মাধ্যমে দেখেছিলাম। এর মাসখানেক আগে…

দইজ্যার কূলে

(চৌচালা সৈকত, মাসখানেক আগে গিয়ে এ নামটাই শুনতে পাইলাম। কিন্তু এ লেখা যখন লেখা হয়— ২০১২ সালের অক্টোবর, তখন নামটা শুনি নাই। এ ৪-৫ বছরে জায়গাটার অনেক চেঞ্জ হইছে। পোর্ট বরাবর বড়সড় রাস্তা হচ্ছে, ওই রাস্তা দিয়ে বড় লরি চলবে। আগের রাস্তা নাই। নাই তারে সঙ্গ দেওয়া গাছগুলা। সেই নীরবতাও নাই। হয়তো সামনের কোনো গল্পে…