যদি প্রেম না থাকে

এক.

বই। এটা আসলে পুড়িয়ে ফেলার জিনিস। তার চেয়ে ভালো— যদি বই বইলা যদি কিছু না থাকে। তাইলে তো পুড়ানোর বা পুড়ার ঝামেলা নাই। যেমন ধরেন যদি প্রেম না থাকে। তাইলে তো কাউরে বলা যাবে না ‘ভালোবাসি’। নাকি যাবে? নিজেরে! বই কী একটা আয়নার মতো। কোনো বইয়ে তোমার চেহারা মানুষ। কোনো বইয়ে ফুল, কোনো বইয়ে পাখির। কোনো বইয়ে তুমি নিজের চেহারা দেখতেই চাও না। বইয়ে বইয়ে আমার এতো ভেদ কেন! না-কি বইয়ের চেহারা তোমার হাত বানানো হইলে তুমি সুন্দর, আমি অসুন্দর। তাইলে আসো বই পুড়াই। পুড়াইতে ভালোবাসি। খৈ পুড়াই। দৈ পুড়াই। ছৈ পুড়াই। পুড়াইতে থাকি। বাকি থাকি আমি। না-কি আমার বাস বই, খৈ, ছৈ এর ভেতর। না-কি কেউ কারো মধ্যে থাকে না। যখন বুঝে থাকে না, তখন খালি পুড়াইতে থাকে। পুড়াইতে থাকে। না পুড়াইলে ভালো থাকে না। কোনো অর্থ হয় না। অনর্থ হয় না।

wahed-sujan-photo

দুই.

একদা আমি যখন মেঘের ভেতর হাঁটলাম। এক জোড়া প্রজাপতি আমার কাছে বৃষ্টি চাইল। আমি তাদের বলি, মেঘ হলো বৃষ্টির আধার। মেঘ যখন নৃত্য করে বৃষ্টি হয়। যত রকম নৃত্য, তত রকম বৃষ্টি। মেঘের কাছে বৃষ্টি চাও। প্রজাপতি নাছোড়বান্দা। তারা বলতে থাকে, তুমি তো মানুষ। তোমার কাছে বৃষ্টির চাবিকাঠি। তুমি চাইলে বৃষ্টি হবে, নইলে হবে না। অবাক হয়ে বলি, এ কথা কে বলল তোমায়? প্রজাপতি বলে, মানুষ বলেছে, মানুষ বলেছে, মানুষ বলেছে।

আমি প্রজাপতি দুটির নাম দিই। বোকা মানুষ, সোকা মানুষ। এইবার দেখি বৃষ্টি নামাতে পারিস কি-না! একটা প্রজাপতি বলল, আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেবে মেপে। এমনি ঝরঝর বৃষ্টিতে ছেয়ে গেল চারদিক। সবকিছু ভিজে গেল। এমনকি সমুদ্র-নদী-খাল-বিল-পুকুর-ডোবার জল। সবাই ভিজে গেল। আর কেউ কেউ তো ভেসে গেল। আর আমি দাঁড়িয়ে রইলাম। শুকনো খটখটা!

প্রজাপতি দুটির কাছে আমার জন্য বৃষ্টি ভিক্ষা চাইতে হারিয়ে গেল।

তিন.

কবি বন্ধুর প্রমোশন হইছে। তার স্ত্রীকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানাইলাম। খুশিতে ডগমগ স্ত্রী বলল, বাসায় আইসেন। আমি এক লাইনের গল্প লিখলাম ‘স্বামীর প্রমোশনে অভিনন্দন জানাতে ছেলে বন্ধুকে বাসায় দাওয়াত করল স্ত্রী’। তিনি বললেন, এটা গল্প হয় নাই। সহি অনলাইন পত্রিকার শিরোনাম হইছে।

 

Comments

comments