জানালার পাশে বসে থাকার কটা দিন

এক.

যদিও শীত শীত লাগে
জানালার পাশে বসে থাকার কটা দিন

পৃথিবীর কতো গভীর আকাঙ্ক্ষা
দূরগত শীতের গান তার গায়
অথচ দুনিয়া দেখতে পায়
দেখতে দেখতে কার্তিক পেরিয়ে
শীতের তারাগুলো ডেকে আনছে
নতুন ধানের ঘ্রাণ
শীত আসছে!

এই জানালার
এপাশে প্রাগৈতিহাসিক হিমে
ওপাশে চাঁদটা জবুথবু
এই জানালায়
তার শার্সিতে
কুয়াশার ঝরতে আসা
শুকনো দাগ, দীর্ঘশ্বাস

আহ!
শীত আসেনি
অন্য কোনো বেদনা-বিরহে
পৃথিবী জমে আছে
সে কখনো শীত দেখেনি!

দুই.

আমার এই দিনগুলো
জানালায় প্রখর রোদে
কাচের চেয়ে বেশি পুড়ছে দু’কাঁধ
গাইছি না কোনো গান
সানশাইন মেকস মি হ্যাপি

আহা! লোকটা
হয়তো খুশিই ছিল তখন
যখন তার প্লেন পুড়ছিলো
আমি ততটা নই

আমি কি সূর্যের আরও কাছে
পুড়ছি তো খুব
তবুও বসে আছি, থাকি
এভাবে আমার পুড়তে থাকা দিনগুলো
আরও কিছুদিন
পুড়তে থাকি অসুখে

কোনো দিন একা একা
পুড়তে থাকবে আমার জানালাটা
সূর্যের আরও নিকটে

তিন.

এই পৃথিবীর কোথাও যদি
আমাদের দেখা হতো
এত কাছে যে নিজেদের খুঁজতাম আমরা
সেখানে যেন গান থাকে, মূলত সুর
আমরা তার অর্থ খুঁজতাম না
না কোনো ইতিহাস

সেসব গান লেখা হয় এমন এক কালে
যখন ছিলাম কারো ভাবনায়
আর যা যা ভূগোলে নিরন্তর
একটু মুহূর্ত শুধু থাকতে চায়
আমরা তাদেরই মতো আমাদের ভাবনায়
যুদা হয়ে তালাশ করি
যদি তার কোনো উত্তর না থাকে
আহা! আমরা এসে গেছি খুব কাছাকাছি!

চার.

এই পৃথিবীর আরও গান
দেখা আর শোনার হৃদয়
আরও কিছু প্রেম ধরতে না পারার
প্রতিদিন একটু একটু করে জমতে থাকা
আলস্য
জমতে থাকে আরও
হয়তো দেখা হয় না, শোনা হয় না
সেই গানগুলো
আমার মতো অন্ধকার হয়ে
সবুজ ঘাসের চোখ পাহারা দেবে
আমারই বাসনা
থাকা অথবা না থাকার কালে
অর্থহীন এই কথাগুলো
ঠিকঠাক বুঝে নেবে গন্তব্য!

পাঁচ.

এ গল্প। ছোট ও সংক্ষিপ্ত।  আমাদের ভীষণ তাড়া। শেষটুকু বলা হয়ে ওঠে না, তবু। হারিয়ে যাবার বেদনা, আর ফিরে পাবার বিস্ময়। হায় অন্ধকার,  কিছুই তো বলা হলো না!

ছয়.

আমাদের বুকের মাঝে হিম হয়ে যে নক্ষত্র কখনো যদি জ্বলে উঠে আমরা তার দেখা পাবো না। সেই  নক্ষত্রেরা দেখবে শুধু  আমরা জ্বলে জ্বলে অবশেষে কারো বুকে জমে রবো দীর্ঘশ্বাস হয়ে। হিম রাতের শেষে তারা বৃষ্টির জলে একাকার।  আমরা নেই হয়ে হয়ে তবু হয়ে রবো কিছু ধূসর রেখা। অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ!

Comments

comments