শহর আলীর অন্যজীবন

০১.
সুর তোলা খিলখিল তরঙ্গ শহর আলীর চারপাশের বাতাস কাপিয়ে দেয়। কেপে ওঠে লাইটপোস্টের ধোঁয়া উঠা বিবর্ণ আলো-আঁধারি। শহর আলীও কেপে ওঠে। আলো-আঁধারিতে সে কাউকে দেখতে পায় না।   অজানা কোন এক রহস্য ঘাপটি মেরে এগিয়ে আসে। রহস্যের ভেতর হজম হয়ে যায় শহর আলীর বোধ-বুদ্ধি।

সে খোয়াব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। তার ঘুম ভেঙে যায়। সূর্য পাখনা মেলে উঠি উঠি করছে। সে উঠে গিয়ে জানালা খুলে দেয়। দিনের আলোতে রাতের রোশনাইয়ের কিছু আর অবশিষ্ট নাই। অনিদ্রা শহর আলীর মধ্যে নিজেকে সমর্পিত করে।

আবারও সেই হাসি। এবার পাপড়ি মেলে ফুটতে শুরু করেছে। কি যেন অচেনা সুবাস শহরের আশে পাশের বাতাসে ঢেউ তুলে জড়িয়ে ধরে। চমক ভয়ে রূপ নেয়।ভয় পেয়ে আয়াতুল-কুরসি ইয়াদ করার চেষ্টা করে, পারে না। নির্জন রাস্তায় বেওয়ারিশ কুকুর – বিড়াল পর্যন্ত নাই। সবকিছু আউলা হয়ে আসে। মনে করার চেষ্টা করে এতো রাতে সে এখানে কেনো।
আবার হাসির শব্দ। এবার আরো কাছে।  একদম ঘাড়ের পেছনে। শহর আলী সাহস করে পিছন ফেরে।

তাকে দেখতে পরীর মতো লাগে। যদিও শহর কখনো পরী দেখে নাই।

আকাশ থেকে নেমে আসলো বুঝি। অন্ধকারে ঝলমল করছে।  চাঁদহীন ঘুটঘূটে অন্ধকারে কি এক অচেনা আলোর ফোয়ারা তার শরীর থেকে বের হয়ে শহরকে স্পর্শ করতে চায়। সে আলো তার সামনে ছটফট করতে থাকে। হাসিতে সেই আলোর ঝিলিক। মেয়েটার গা থেকে আসা সর্বনাশা সুবাস নির্জন রাত্রির অকারণ নিঃতরঙ্গতাকে নিরবে ভেঙ্গে দেয়। তার হাসির চেয়েও আলাদা কিছু। কোনো খোয়াব কিনা! কী করবে সে ভেবে পায় না।
– কী মিয়া, ডর খাইছো নি?
তারপর আবার খিলখিল হাসির তরঙ্গ। সেই প্রশ্নে শহর যেন নিশ্চিন্ত হয়। নিশ্চিন্তির দড়ি বেয়ে গলায় হামাগুড়ি দিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে। গলা পরিষ্কার করে প্রশ্ন করে,
– তুমি ক্যাডা?
– আমারে চিনো নাই? মনে হইতাছে নতুন আমদানি! নতুন-পুরান দিয়া আমার কী! আমারে মনে ধরছে কিনা কও।
শহর কি বলতে বুঝতে পারে না। ভাবে, এই মেয়ে কী বলে। এতো রাতে এই মেয়ে ঘরের বাইরে কেনো।

শহর আলী ভয়-ডর খাওয়ার মানুষ না। ঘুম আসছিলো না। রাত বাজে তিনটা। শরীর-মন দুটোই কেমন যেনো ছটফট করছিলো। অস্থিরতা কমানোর জন্য মাঝে মাঝে এইভাবে রাস্তায় বের হয়।  আজকের হাটাটা নিশিতে পাওয়া লোকের মতো। আনমনে হাঁটতে হাঁটতে কখন যে কোন দিকে এলো তার মাথায় খেলে না। তারপর দেখে পরীর রূপ ধরে একটা মেয়ে যেনো আকাশ থেকে নেমে এসেছে।

শহর মেয়েটার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে। এবার যেনো তার কাছে সব কিছু পষ্ট হয়। ভয় পানসে হয়ে আসে। শিরদাড়ার শিরশিরানি লজ্জা পেয়ে উধাও হয়ে যায়। বুকের লোমে নিচে জমা ঘাম শুকাতে থাকে। সেখানে এবার নুন জমবে। পেছনের পথটা জেগে উঠে। এই পথের এক মাথায় তার আস্তানা।  শহর কিছু না বলে হাঁটা শুরু করে। মেয়েটাও তার পিছে পিছে আসে। শহর পেছন না ফিরেই বলে,

– তুমি আমার পিছে পিছে আইবা না।
– আইলে কী অয়; আমি কি দেখতে এতোই খারাপ আমার দিকে তাকান যায় না?
– শুনো, তুমি আমারে ভুলাইতে পারবা না। আমি তেমন মানুষ না।
– তুমি কেমুন মানুষ গো! হা হা হা … পুরুষ মানুষরে আমার চেনা আছে। সব পুরুষই এক কিসিমের।

কথা নয়, কুয়াশার গা বেয়ে তরল জোসনা চুয়ে চুয়ে নামছে। শহর কি পারে জোসনার ডাক অগ্রাহ্য করতে। আজ   কি সে  চন্দ্রাহত! দূরে কোথাও পেচা ডেকে উঠে।

মেয়েটা তার হাত ধরে। নিদারুন উম ছড়িয়ে পড়ার অপেক্ষা থাকে। কিন্তু  দ্বিধায় শহরের চাঁদকে দ্বিখন্ডিত। শহর নিঠুরভাবে ঝাকি দিয়ে হাত টেনে নেয়।  চাঁদটি খন্ড খন্ড হয়ে যায়। মেয়েটা তারপরও পিছে পিছে আসে। শহর জোরে হাঁটে। একসময় মেয়েটা পিছনে পড়ে থাকে। পিছন না ফিরে বুঝতে পারে- সেখানটায় কেউ নাই। শহর নিজেকে বলতে থাকে, আসলে কেউ ছিলো না, সব চোখের ভুল। আনমনে হাসে।

শহর ঘরে ফিরে। হঠাৎ করে সেই মিষ্টি গন্ধটা টের পায়। আনমনে মেয়েটা যেখানটায় ছুঁয়েছিলো সেখানে হাত বোলাতে থাকে। তারপর কী যেন হয়, কি? শহর আলী বাথরুমে গিয়ে গোসল দেয়। ভালো করে সাবান ঘষে।  সাবানের গন্ধের সাথে সেই গন্ধটা মিশে সে যেন ফিরে যায় শঙ্খমিত্রার চরে। সে চরে করিমন নাই। আছে অন্য কেউ।

০২.
শুয়ে শুয়ে শহর করিমনের কথা ভেবে অনুতপ্ত হয়। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় মনে মনে। কেন চায় সে জানে না। সে তো কোনো অপরাধ করে নাই। তার ঘুম আসে না। খালি বিছানায় ছটফট করে। কেমন যেনো উচাটন মন।
ফজরের আযানের দিকে শহরের চোখে তন্দ্রা মতো আসে। সে খোয়াবে দেখে পরীর মতো মেয়েটাকে।  তার হাতে চাঁদ খেলা করছে। সে খোয়াব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। তার ঘুম ভেঙে যায়। সূর্য পাখনা মেলে উঠি উঠি করছে। সে উঠে গিয়ে জানালা খুলে দেয়। দিনের আলোতে রাতের রোশনাইয়ের কিছু আর অবশিষ্ট নাই। অনিদ্রা শহর আলীর মধ্যে নিজেকে সমর্পিত করে।

শহর আলী গেটের তালা খোলে। তার ডিউটি শুরু।

০৩.
– এতো টেনশন কিয়ের মিয়া। মউজ করতে ইচ্ছা করলে মউজ করো। এই শহরে হগ্গলে নিজ নিজ দিকগিরি নিয়া ব্যস্ত। হগ্গলে এই কাজই করে।  কে কার খবর রাখে। এটা নিয়া পেরেশানীর কাম নাই। আমাগো বড়সাব থেইকে এই আমি রহিম ডেরাইভার হগ্গলে মউজ করি।
রহিম ড্রইভারকে সে তার দুধর্ষ অভিজ্ঞতা শুনিয়ে মাত করে দেবে ভাবছিলো। কিন্তু এই লোক তার চেয়ে এককাঠি বাড়া। সে শহরকে নানা রকম কেচ্ছা-কাহিনী শুনায়। শহরের কান ঝা ঝা করতে থাকে।

রহিম ড্রইভারের কথা শুনে শহর অবাক হয় না। কেনো অবাক হয় না, এটা ভেবে সে অবাক হয়। তার কাছে কথাগুলো স্বাভাবিক মনে হয়। রহিমের জবানে নানা কাহিনি শুনে লজ্জা লাগে আবার ভেতর উত্তেজনাবোধ করে। ইচ্ছে করে রহিম ড্রাইভারকে গুরু মানে।

আবার ভাবে, ছি! এইসব কী ভাবতাছি আমি, করিমন কী ভাববো।
রহিম ড্রাইভার তার মনের কথা ধরে ফেলে। বলে,

-কী মিয়া, বউয়ের কথা চিন্তা কর নি?

শহর চমকে উঠে।

সে বলতেই থাকে,

-তোমার বউ তোমারি থাকবো। পুরুষ মানুষের এক আধটু পরিবর্তন না হইলে রুচি নষ্ট হইয়া যায়। এইসব কিছু তোমার বউ জানবো না। কেউ না জানলে খুন করলেও খুন হয় না। জানলেও বা কি!

০৪.
করিমনের বুকটা ধক করে উঠে। সে আবার সেই খোয়াবটা দেখছে । ঐ শঙ্খমিত্রার চরে সে আর শহর আলী ঘুরতেছিল।  করিমন শহরের হাত ছাড়ে না। দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে রেখেছিলো। হঠাৎ কুয়াশা মত ঝাপসা কিছু শহর আলীকে ঘিরে ধরে। সেই পর্দা সাফ হলে দেখে সেখানে  শহর আলী নাই।  কুয়াশার চাদরে কোথায় যেন মিলিয়ে গেছে। বিরাণ চরে শহরের নিঃশ্বাসের শেষ উত্তাপটুকু পর্যন্ত উধাও হয়ে গেছে। করিমন চরের এই মাথা থেকে ঐ মাথায় দৌড়াতে থাকে। নাই, করিমনের শহর আলী কোথাও নাই।

পরপর তিন দিন করিমন একই  খোয়াব দেখল। এই খোয়াবের মানে কী করিমন বুঝতে পারে না। পাশে তার শ্বাশুড়ি শোয়া। সেদিকে ফিরলে কাল ঘুমের আভাস পাওয়া যায়। ইচ্ছে করে তাকে ডেকে তোলে। আজ কতোদিন হলো শহরের কোনো খোঁজ খবর নেই। পনেরো দিন আগে  বাজারের মোক্তার মিয়ার মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলো সে ভালো আছে।  এই কথায় শেষ। তারও আবার নিজের কানে শুনে নাই। এরমধ্যে টাকা এসেছে। শহরের চাচাতো ভাই শফি মিয়া নিয়ে এসেছিলো। সে বলেছে,

-ভাবী সাব! শহর আলী বেশ ভালো কাম পাইছে। আগের চেয়ে মোটা হইসে।

করিমনের জন্য শহর লালপাড়ের একখানা শাড়ি  আর সাজুগুজুর টুকিটাকি জিনিসও পাঠিয়েছে।
শহর আলী কাছে নাই- কি হয়েছে! করিমনের ইচ্ছে ছিলো এই শাড়ি পরে মনের মতো করে সাজবে। কিন্তু শ্বাশুড়ী তার ঘরে থাকে, তাই পরতে পারে না। বড়ই লজ্জা লাগে। তারপরও যখন মন চায়, শাড়িখানা হাতে নিয়া বসে থাকে। শাড়িতে হাত বোলায়। এই শাড়িতে শহরের হাতের উম লেগে আছে। মন বলে, যে নারীর স্বামী থাকে ভিনদেশে তার এতো সাজগোজ কিসের। তার কোন সাধ আহ্লাদ নাই।
শহরের উপর তার অভিমান হয়। কতো মানুষ বাড়ি আসে। শহর আসে না। কী এমন তার রাজকার্য, বাড়ি আসতে পারে না!

করিমন জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। কী সুন্দর চাঁদ গো! চাঁদের আলোয় বাড়ির চারপাশের গাছগুলোর ছায়া আরো গাঢ় হয়। আহারে যদি শহর আলী  আজ কাছে থাকতো—  শঙ্খমিত্রার চরে শহরের কোলে মাথা রেখে শুয়ে থাকতো। তার মতো সুখী আর কেউ হইত না।
করিমন দীর্ঘ নিশ্বাসে বাতাস গরম হয়ে উঠে। ইচ্ছে করে জানালাটা বন্ধ করে দিতে । এতো সৌন্দর্য তার সহ্য হয় না। পেটের বাচ্চাটার নড়াছড়া টের পায়। করিমন বলে,

-কিরে তোরও কি তার জন্য পেট পুড়িছে?
করিমন পেটে হাত বোলাতে থাকে। তার মনটা আনন্দে ভরে যায়। ঘরে মধ্যে ঢুকে পড়া এক টুকরো চাঁদের আলো ছুঁয়ে দেখে। সে ভাবে শহর আলী নিশ্চয় চাঁদনিরাতে তার কথা ভাবছে। তার মতো শহর আলীরও মন কাঁদছে। চাঁদের আলোয় করিমনের অশ্রুভেজা মুখ চকচক করে। সে আস্তে করে কপাট খুলে বের হয়। দাওয়ায় বসে নানা কথা ভাবে। কখনো হাসে কখনো কাঁদে।

০৫.
শহর আলী চাঁদটার দিকে তাকায়। আহা, আরেকটু এগুলেই শঙ্খমিত্রার ঢেউ খেলানো রূপালী চর।  চর কই, এখন তো শঙ্খমিত্রায় ভরা জোয়ার। শহর দূর থেকে অনাদিকাল ধরে বয়ে যাওয়া শঙ্খমিত্রার জলের ধ্বনি শুনতে পায়। উজান থেকে ভাটায় চলে এই জলের ধারা।

দূর ছাই! আজ অন্ধকার হলেই ভালো হতো। অথবা যদি চাঁদ মেঘের আড়ালে মুখ লুকাতো। গত তিনদিনে শহর আলী দ্বিধার মধ্যে বসত করেছে। কিন্তু থেকে থেকে সেই সুবাস তার গায়ে একটা আদিম অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। শঙ্খমিত্রার ভরা জোয়ার তার গায়ে ভর করেছে। সে শুধু ছুটছে চায়। সে বার বার খোয়াব দেখে।  খোয়াবে দেখে শঙ্খমিত্রার তীরে সে অন্য জীবনের সন্ধান পেয়েছে। শঙ্খমিত্রা এবার যে জঙ্গলের রূপ ধরে। একি লুকোচুরি খেলা। শহর আলী আর শঙ্খমিত্রার চরের শহর আলী থাকে না। সে প্রকান্ড একটা বাঘ হয়ে উঠে। হুংকার ছাড়ে।

০৬.
না, আজ আর কোনো দ্বিধা নেই।

শহর আলী সেই জায়গাটায় কাচভাঙা তরঙ্গ আর আলোর ফোয়ারার অপেক্ষায় থাকে। চারদিক চুপচাপ। জমাটবাঁধা ছায়াগুলোকে তার কাছে মনে হয় এই বুঝি কেউ দাঁড়িয়ে আছে।  শহর ভাবে, ডর খাওনের টাইম নাই। সে সময় তার সামনে এসে দাঁড়ায় করিমন।   তার গেঁয়ো গন্ধে বাতাস দুষিত হয়। চাঁদ মেঘের আড়ালে মুখ লুকোয়। শহর অস্বস্থিবোধ করে। করিমনের শ্যামলা দেহ হাস্যকরভাবে তার সামনে দুলে। করিমন শহরের কাছে পাত্তা পায় না। শহর রাস্তার পাশের নর্দমায় একদলা থুথু ফেলে।

করিমন মিলিয়ে যায়। তার জায়গায় দাড়িয়ে থাকে বাতিহীন ছাল-ওঠা বুড়ো ল্যাম্পপোষ্ট।  গেঁয়ো গন্ধ মিশে যায় প্রাণহীন শুকনোর পাতার শিরা উপশিরায়। শহরের পায়ের নিচে পরে সেই পাতাটা মচমচ করে উঠে। শহর চমকে উঠে, আরেকটু এগিয়ে যায়। পাতাটা উড়ে গিয়ে নর্দমায় ঠাই নেয়।

হঠাৎ সব কিছূ ছাপিয়ে মিষ্টি সুবাসের ঘূর্ণি ভেসে আসে।  তার সাথে মিশতে চায় শহর আলীর ঘামের নোনতা সুবাস। সামনে কে আছে ঠাহর করতে পারে না। কিন্তু শহর কোন কথাও বলে না। নীরবতাই তার ভালো লাগে।  বাজতে থাকে। সুবাস তার গন্তব্য ঠিক করে দেয়।

… সেই হাসি পাপড়ি মেলে ফুটতে শুরু করে।  খিলখিল তরঙ্গ আর শঙ্খমিত্রার জলের দুরন্ত কলরোল একাকার হয়ে যায়। দূরের সেই জঙ্গল শহর আলীর সামনে সরে আসে।  জঙ্গল আস্তে আস্তে আরো ঘন হতে থাকে।*

*গল্পটি বারোয়ারী উপন্যাসের অংশ হিসেবে চতুর্মাত্রিক ব্লগে প্রকাশিত হয়েছিল ২০১০ সালে। শহর আলী, করিমন ও শঙ্খমিত্রা (নদী)এই নাম ক’টির জন্য কৃতজ্ঞতা ব্লগার কৃষ্ণ তরুণের কাছে। তিনি সেই বারোয়ারী উপন্যাসের প্রথম অংশটি লিখেছিলেন। এটি আমার লেখা অংশের পরিমার্জিত রূপ।

> ব্যবহৃত ছবিটি একেঁছেন পাখি ও পাপ –র কবি নির্ঝর নৈঃশব্দ্য

Comments

comments

4 thoughts on “শহর আলীর অন্যজীবন

Comments are closed.